প্রবন্ধ (Page ২)

রাঙা পথের ধূলায়

ধ্বনির থাকে প্রতিধ্বনি। অনেক সময় ঝগড়াঝাটিতে আমরা ব্যঙ্গ করি, ভেংচি কাটি। প্রতিধ্বনি ঋণী আছে ধ্বনির কাছে, সেটা অস্বীকার করতে গিয়ে সে ধ্বনির প্রতি মুখ ভ্যাংচায়, উপহাস করে যেন। এইজন্য রবীন্দ্রনাথ বলেছেন, ‘ধ্বনিটিরে প্রতিধ্বনি সদা ব্যঙ্গ করে / ধ্বনি কাছে ঋণী সে যে পাছে ধরা পড়ে।’

শব্দের ইন্দ্রজাল : দেহ ও শরীর, দেহ ও মন

পথ চলতে কারো সঙ্গে দেখা হলে আমরা বলি, “কেমন আছেন?” ফোনকলে সালাম বিনিময়ের পর আমরা কুশলাদি জানতে বলি, “শরীর কেমন?” আমরা আলাদা করে জানতে চাই না মনটা কেমন আছে। তবে হুমায়ুন আহমেদ-এর এক নাটকে একটা সংলাপ ছিল এমন, ‘মনডা ভালা?’ দেহের খবর নিলে মনের খবর

অল্পস্বল্প জীবন পাঠ

জীবন নিয়ে অনেক তত্ত্বকথা আছে। এইসব তত্ত্বকথায় আছে ধর্ম্মতাত্ত্বিক মতামত, পুরাণকেন্দ্রিক গল্পকাহিনী, অধিবিদ্যাজাত উপস্থাপনা, বস্তুবাদী মতামত আর বিজ্ঞানভিত্তিক বিশ্লেষণ৷ আমি জীবন নিয়ে বলতে গিয়ে তত্ত্বকথা শুনাব না, বরং আমার সামান্য জ্ঞানকে অবলম্বন করে প্রায় মুর্খের মত অতি সহজ ভাষায় কিছু বলবো৷ আমার কথায় অধিবিদ্যাজাত দর্শন,

শব্দের উৎস কিংবা (ক্রিয়াভিত্তিক-বর্ণভিত্তিক) অর্থ সন্ধান (পর্ব্ব— পাঁচ)

সূচী: ঢল ।। রক্ত ।। সৌদামিনী ।। মেদ, মেধ ।। নমস্কার ও প্রণাম     এই অতিমারীর কালে যখন বলা হচ্ছে, ঘরে থাকুন ঘরে থাকুন— রাস্তায়, শপিংমলে, যানবাহনে তখন মানুষের ঢল নেমেছে। ঢল তো নামে পাহাড় থেকে, অতিবৃষ্টির কালে পাহাড়ী ঢাল বেয়ে ঢলের পানী গড়িয়ে

বঙ্গীয় নারী শিক্ষা ও বর্ত্তমান শিক্ষা ব্যবস্থায় নারির জীবন

শিক্ষা শব্দটা আমাদের জীবনযাত্রার সাথে ওতোপ্রোতভাবে জড়িয়ে রয়েছে। কারণ শিক্ষাই মানুষের বৌদ্ধিক ও কৃষ্টিগত ঐতিহ্যকে সৃজনশীল ও গতিশীল করে তোলে। মানুষের মন, বুদ্ধি ও রুচিকে সুবিন্যস্ত করে এই শিক্ষা। শিক্ষা শব্দের উৎপত্তি সংস্কৃত ‘শাস’ ধাতু থেকে। সাধারণভাবে বলা যায় মানুষের আচরণের কাঙ্খিত, বাঞ্চিত এবং ইতিবাচক

(ক্রিয়াভিত্তিক-বর্ণভিত্তিক ভাষাদর্শনের গল্প) জল

চৈত্রের শুরু, বৃষ্টির দেখা নাই, আকাশেও মেঘের ছিটেফোঁটা দেখা যায় না। প্রচণ্ড খরা, মাঠ, ঘাট শুকিয়ে ঠনঠন। তন্ময়ের দাদুর বাড়ীতে সামনে যে পুকুরটা তাতে জল শুকিয়ে এসেছে, কামলারা আড় বেঁধে কুইন দিয়ে পাশের খালে জলসিঞ্চন করছে। খাল বেয়ে জলের ধারা গিয়ে ধান ক্ষেতে পৌঁছবে। পুকুরের

আমার পরী, রাজপুত্র তোমার

আনেকদিন আগে ফেসবুকে আমার ১৯/২০ বছর বয়সে লেখা একটি কবিতা পোস্ট করেছিলাম। কবিতাটির শিরোনাম ছিল— “এ কেমন ভালবাসা?” প্রমা নামের একটি মেয়ের উল্লেখ ছিল কবিতার শেষ স্তবকে। শেষ স্তবকটি ছিলঃ ‘প্রমা, তুমি কেমন ভালবাস? অন্তরে বাস ফুলের সুবাস প্রকাশ করনিতো জীবন আঁকার তুলি ধরে রঙ

যুক্তাঞ্চল : আঞ্চলিক সত্তার সমন্বয় ও অদ্বৈত বিশ্বের রূপরেখা

জানি; মৃত্যু যেখানে মহিমাময়, সেইখানে, তোমাকে ঠেকানো বড় দায়! তবু বলি, …এইসব মৃত্যুর মিছিলে তুমি কী ধর্ম্ম করছ হে খ্যাপা? … ‘ধর্ মিতি মিতি’ রাগে (ধারণ যোগ ম-এ মনের ধরনে গাথা) ধর্ম্ম— যে ভাবের রসে মিলন বিরহে গাথা জীবনকলায়, ‘কর্ মিতি মিতি’ রাগে (করণ যোগ

ভাষা ও সাহিত্য সমালোচনা তত্ত্ব

পর্ব্ব— ১ মাঝেমধ্যে শিল্প ও সাহিত্যের ভাল-মন্দ আলোচনা-সমালোচনা পড়ি বড় কাগজে, ছোট কাগজে। কিন্তু এটাও বুঝি আমাদের শিল্প-সাহিত্যকে ঘিরে সমালোচনা-সাহিত্য এখনো গড়ে ওঠেনি। কখনো খুবই ভাল সমালোচনা দেখতে পাই লিটল-ম্যাগগুলোতে, আর যা ছাপা হয় তাকে কী যে বলি বুঝতে পারি না। ওই সব পত্রিকার সমালোচকরা

ভাষা

‘ভ’ বর্ণের অর্থ ভাতি যুক্ত যে অর্থাৎ যে সত্তা অস্তিত্বলাভ করে দীপ্তমান। ভ-এর আধার— ‘ভা’ ভা-এর দিশাগ্রস্থ বিচ্ছুরণ— ‘ভাষ’ ভাষ-এর আধার— ‘ভাষা’ অর্থাৎ যে কোনো শোভমান সত্তা নিজেকে যে সব শব্দ, রস, রূপ বা গন্ধের মাধ্যমে প্রকাশ করে তাকেই তার ভাষা বলা যায়। তাই পাখীর

চিনিফানা : ফানাফিল্লা তত্ত্ব ও বিবিধ নির্য্যাস

… রচয়িতা মারা গেছে সৃজন বর্ষায়, খুঁজেও পাবে না তাকে জলের বাসরে! … জলের হৃদয়ে মিশে চিনি হল ফানা! মিশে জলজ তরলে হল গো সরলা! হল আমা হতে তুমি— আমি, তুমিময়! … বন্ধু, আমি কি তোমাকে চিনি, চিনির প্রকারে, চায়ের লিকারে? বল, কী ভাবে মিশিবে

ঝিলমিল ঝিলমিল করে রে ময়ূরপঙ্খী নায়

বাউল সম্রাট আব্দুল করিমের এই গানটা কে না শুনেছে! আবহমান ভাটি বাংলার জীবনযাত্রা এই গানের মাধ্যমে ফুটে উঠেছে। একটা নৌকা— নদী বেয়ে চলে, সেই নৌকার শুরু থেকে শেষ পর্য্যন্ত যেন একটা জনপদেরই জীবনযাত্রার কাহিনী। ছোটবেলা আমরা রচনা লেখেছি নৌকা ভ্রমণ। না বুঝেই লিখেছি, মুখস্ত লিখেছি।