গল্প

গোধূলী জন্মের উপকথা

একটা ছোট্ট চড়াই কুটকুট করে বন খাচ্ছে, বেকারীর বন। একরাশ অবহেলায় ফেলে রাখা বাঁশ পড়ে আছে রাস্তার পাশে। বনটা অতি বিস্বাদ। তবুও ঠোকর দিচ্ছে আর দিচ্ছে। হঠাৎ পাশ ঘেষে কিছু একটা ছুটে গেল। ভয়ে উড়ে গেল চড়াই। একটা সুন্দর সন্ধ্যা কেক উড়িয়ে ডাকল চড়াইটাকে। ভয়ে

বলিদান

১ এই রাসনগর মৌজায় পূজাতে সকলেই পশু বলি দেয়। পাঁঠা মহিষের বলির সাথে সাথে অন্তরের পশুর-ও নিধন হয় এ’সব শাস্ত্রের কথা নাকি পুরোহিতের বিধান এ’সব নিয়ে তা’রা মাথা ঘামায় না। এ’ছাড়া পুজায় পশু বলি দিয়ে সত্যি সত্যি কা’রোর মনের পশুর বিনাশ হয়েছে কিনা এর কোন

সবুজ ডায়েরী

ক্যাম্পাসে গেলাম। সহপাঠী ইসরাত জাহান তানিয়ার সাথে দেখা হৈল। বল্‌ল, তুই ত ক্যাম্পাসের বিরাট তারকা, প্রথম আলোতে দেখ্‌লাম। — তাই নাকি? — হুঁ। — আমিও দেখেছি। গান-বাজনা করে ক্যাম্পাসে পৌঁছলাম। ঝুপড়ীতে হায়দায় ভাইয়ের দোকানে বসলাম। (ব্রিটিশ কাউন্সিলের দেয়া) ব্যাগটা নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন কর্‌ল। ব্যাগটা কাঁধে

নিউ নর্মাল ধরিত্রী

দিনরাত একাকার হয়ে গেছে। জগদ্দল পাথরের মত চেপে বসেছে সময়। ঘড়ির বুকের খাঁচায় ঘণ্টা মিনিট সেকেণ্ডের কাঁটাগুলো একগুঁয়ের মত ঠুসে গেঁথে আছে। প্রায় অচল। এগুচ্ছে কি! মনে হয় না। রুগ্ন নিথর আর সন্ত্রস্ত সময়ের উদ্বাহু যাপন চলছে পৃথিবীতে। কিন্তু আর কতদিন! আর কবে এ বনসাই

বৃষ্টিকে মনে হয় হানাদার

যুদ্ধ কোন সহজ ঘটনা না। অস্ত্রকারবারীদের নির্ম্মম খেলা চাপিয়ে দেওয়া হয়েছিল আমাদের ওপর। কর্ণফুলী পেপার ও রেওয়ান মিল অবাঙ্গালী দাউদ কোম্পানীর সম্পত্তি হওয়ায় যুদ্ধের শুরুতে সেনাবাহিনী চন্দ্রঘোনায় ঘাঁটী গাড়ে। মিলগেটের তল্লাশি এড়ানোর জন্য মা আমাদের নিয়ে স্কুলের পিছনের পাহাড় ডিঙ্গিয়ে নিস্তব্ধ বনপথে দোভাষী বাজারের দিকে

শীতল আগুন উষ্ণ আগুন

সায়ন্তিকাকে যেদিন হঠাৎ দুপুর থেকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না, সেদিন শুধু সায়ন্তিকার ঘরেই নয়, বরং পাড়াতেও রীতিমত আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছিল। কী ব্যাপার! কথা নেই বার্ত্তা নেই মেয়েটা বেমালুম কোথায় উধাও হয়ে গেল! খোঁজ নিয়ে জানা গেল, সেদিন কলেজে অনার্সের কোন পিরিয়ডেই সে উপস্থিত ছিল না।

সুফিকণিকা : পর্ব্ব তিন

[শত শত বছর ধরে সুফী সাধকরা তাদের জীবনের অভিজ্ঞতার কথা বলতে ছোট ছোট গল্প ব্যাবহার করতেন। অল্প কথায় সহজ ভাষায় সুফী সাধকরা তাদের অর্জ্জিত জ্ঞান ও উপলব্ধির কথা জানাতে পারতেন যা হাযার হাযার পৃষ্ঠার বর্ণনায়-ও হয় ত দুঃসাধ্য। আমার সংগ্রহের সেইসব জ্ঞান ও উপলব্ধির তৃতীয়পর্ব্ব

সভ্যতার শুরুতে

লোকটা ঠিক সন্ধ্যা ছয়টা তিন মিনিটে চিৎকার দিয়ে ওঠল, আমার টাকা কেন দিবি না! চারপাশে এমনিতেই গাড়ী ছিল না, তবুও যেন ঠিক সন্ধ্যাটা একটা নিঃস্তব্ধতায় আটকে গেল। টক স্বাদের সন্ধ্যা। মাগীর পুত টাকা দে মাগীর পুত, লোকটার চিৎকারে আবার নিঃস্তব্ধতা ভাঙল! সবাই ফিরে তাকায় তার

নলখাগড়া ও কলম

চমৎকার একটা বিকাল। বাড়ীর বলতে গেলে সবাই উঠানে বের হয়েছে। ওদিকে ছোটচাচার ছেলে তপুকে নিয়ে তন্ময়ের বড় আম্মা আর আম্মা পড়েছে। প্রায় শুকনো উঠানের মাঝখানে ঝাঁট দিয়ে পরিস্কার করা হয়েছে। তারই ওপর কাঠী দিয়ে দাগ টেনে অক্ষরের মত লেখা হচ্ছে, তপুকে শেখানো হচ্ছে কীভাবে লিখতে

পৎ থেকে পাতাল

মা এসেছিলেন, লকডাউন কিছুটা শিথিল হতেই তড়িঘড়ি চলে গেছেন, বাড়ী ছাড়া উনার ভাল লাগে না। রিণির তাই ভাল লাগছিল না, আজ অফিস বন্ধ, কিন্তু বাসায় বসেই অনলাইনে কিছু কাজ সারতে হবে। জানালার পাশে সেই কখন থেকে দুইটা টুনটুনী ওড়াউড়ি করছে, রিণি একমনে তাই দেখছিল। কলিংবেলের

সোনারঘাট

খুলনা থেকে একজন সাঁতারের প্রশিক্ষক এসেছিলেন আমাদের ছোট শহরে। সুমিত্রা পাল ম্যাম। সপ্তাহের তিনদিন উনি আমাদের খোলা ভ্যানে তুলে সহর (শহর) ছাড়িয়ে যেখানে নদী বেশ চওড়া সেখানে সাঁতার শেখাতে নিয়ে যেতেন। আমরা সাঁতার ম্যামের ঘাড়ে পিঠে চড়ে হইহই করে সাঁতার শিখতে চলে যেতাম। কখনো নদীর

একথোকা ছোট গল্প

ধর্ম্ম কাপড়ের দোকানে এক সাথে দুইজন লোক আসলেন। দুইজন লোকই আচরণে অতিশয় ভদ্র এবং রূপে মার্জ্জিত। দুজনের চেহারাতেই পূর্ণিমা রাত্রীর আলো জ্বল জ্বল করছে। দোকানে একসাথে ঢুকলেও বুঝা যাচ্ছে উনারা পূর্ব্বপরিচিত নন। আশ্চর্য্যের বিষয় হচ্ছে দু’জনই একটা থান থেকে সেলাইবিহীন ধবধবে সাদা কাপড়ের এক টুকরা করে