দ্বীপ দিদার

তিনটা কবিতা

ক্ষত বিষয়ক সীমাবদ্ধতা ও সম্ভাবনা ভাবছি, ক্ষতটা সেলাই করে নেব; হাত দুখানি জুড়ে দেব আর দুখানি হাতে। ব্যাক্তিগত হতে হতে ক্রমান্বয়ে বিষিয়ে উঠছি নিজের কাছে— এপারের নুড়ীগুলো কান পেতে থাকে ওপারের বালিদের আলাপনে— হাত বাড়ালেই বুঝি লোপ পাবে দূরত্বটুকু— বেজে ওঠবে সমবেত কোলাহল— পলির কারুকাজে

পাগলের পাগলদর্শন : পাগলের পরমার্থিক চরিতমানস

কোন এক পাগলের কাছে শুনেছিলাম গল্পটী— একদা এক রাজা স্বপ্নে দৈববাণী পেল— ভোরে রাজ্যজুড়ে বৃষ্টি হতে চলছে আর সে বৃষ্টির জল পান করলেই লোকে পাগল হবে। রাজার ঘুম ভাঙল— হায় হায়, এ দেখি ভোর হয়ে এল! … আকাশ মেঘাচ্ছন্ন, মূহুর্ত্তেই বুঝি বৃষ্টি নামে! পুকুরগুলোই রাজ্যের

যুক্তাঞ্চল : আঞ্চলিক সত্তার সমন্বয় ও অদ্বৈত বিশ্বের রূপরেখা

জানি; মৃত্যু যেখানে মহিমাময়, সেইখানে, তোমাকে ঠেকানো বড় দায়! তবু বলি, …এইসব মৃত্যুর মিছিলে তুমি কী ধর্ম্ম করছ হে খ্যাপা? … ‘ধর্ মিতি মিতি’ রাগে (ধারণ যোগ ম-এ মনের ধরনে গাথা) ধর্ম্ম— যে ভাবের রসে মিলন বিরহে গাথা জীবনকলায়, ‘কর্ মিতি মিতি’ রাগে (করণ যোগ

চিনিফানা : ফানাফিল্লা তত্ত্ব ও বিবিধ নির্য্যাস

… রচয়িতা মারা গেছে সৃজন বর্ষায়, খুঁজেও পাবে না তাকে জলের বাসরে! … জলের হৃদয়ে মিশে চিনি হল ফানা! মিশে জলজ তরলে হল গো সরলা! হল আমা হতে তুমি— আমি, তুমিময়! … বন্ধু, আমি কি তোমাকে চিনি, চিনির প্রকারে, চায়ের লিকারে? বল, কী ভাবে মিশিবে

গাজী ভঙ্গী শাহ্ : জগজ্জীবন দর্শনে সুফীর ভঙ্গিমা

বাবা, ভঙ্গী শাহ্! কী এমন ভঙ্গিমায় দর্শন করিলা, রহস্যপৃথিবী? …. বটতলী জংশনে রয়েছ দাঁড়িয়ে, ঠাই। ঝিক্ঝিক্, ঝিক্ ঝিক্, ঝিকিঝিকি, ঝিক্ ঝিক্…. রেলগাড়ী চলে যায়! … রেললাইনটি মিশেছে রেললাইনটির মাঝে, আরেকটি রেললাইন চেয়ে আছে! রেলগাড়ী চলে যায় দিগন্তের দিকে…………. সময়ের পটভূমিকায় কেবলই জংশন, পথে পথে নামে

জীবনের যমজ পাখী, পুতুল ভাঙ্গার দিনে ও অন্যান্য কবিতা

সাঁকো ও পারাপারের ফজিলত সাঁকোটা পার হলেই পেরিয়ে যাব চিহ্নায়কের দূরত্বটুকু* ভূবনগাঁয়ে* অপার শূণ্যতায় একে অপরকে পাব* একে অপরের হব** সাঁকোটা ছুঁয়ে আছে উৎসের মেঠোপথ* গন্তব্যের সম্ভাবনা রেখা** কতটা বিন্দু* কতটা রেখা* ভেদে নয়* অভেদেই মিলিবে পরম ঠিকানা* চল পারাপারে জেনে নিই* বুমেরাং ব্যাকরণখানা**  

গ্রামপতনের ধ্বনি : অরণ্যনগর ও আগামী সভ্যতার আবাসন

………… নাগরদোলায় দোলে নগরজীবন! নাগরিকা, দেখে জানালায়, দূরদেশ— গ্রাম— হাতছানি!… আর প্রাসাদী শাড়ীর কারূকাজে ঢাকে দেহের সুষমা— ফুল, পাখী, প্রজাপতি, বনানী, পাহাড়, নদী… নাগরদোলায় দোল খেয়ে খেয়ে আধোঘুমে ভাবে, জলের সোহাগভরা কাঁখের কলসে পিপাসা মেটানো নদীর যুবক, হাঁটে কুয়াশাঘেরা আড়ালে, নদীবাংলার কূলে বাজে বাঁশী, বাঁশীর

পরিবর্ত্তনা চৌধুরাণী : পরিবর্ত্তন বিষয়ক খসড়া

জংলা নদীর ধারে ধ্যানী বক, আমাকে ধর্ম্মের শিক্ষা দেয়, কেমন ভাবের মর্ম্মে দাঁড়িয়ে থাকতে হয় এক পায়ে; যেমনটা আছে মাননীয় তালগাছ! … পাঠশালা, ধর্ম্মশিক্ষা জানে, বারবার লাড্ডু খাওয়া আমি, রসার্থে সন্ধান করি ভবাপাগলার মালাই বিতান! … মাড়াই পথের মোড় নিতাইগঞ্জের। … জংলা নদীর ধারে (ধ্যানী

ছয়টা কবিতা

জীবনানন্দ ও সচ্চিদানন্দ সংকেত জনপদ মুখরিত যুদ্ধের সম্ভাবনায়* চতুর্পাশ্ব ঘিরে আছে গোলাবারুদের দঙ্গল* ক্ষেপাণাস্ত্রের মতো মানুষ তাক হয়ে আছে মানুষের দিকে* চোখে বুকে পুষছে ভয়ানক বাঙ্কার* উদ্বেগ উৎকণ্ঠায়* তবু জীবনের জীবনানন্দ এক ঘাসফুলে* পাখির পালকে ঢেকে দেয় কৃষ্ণগহ্বর* ভালবাসার নামে বিলি করে সংঘাত বিরোধী সবুজ

শরীর শরীফ : দেহ থেকে মন, অনির্ব্বাণ যাত্রা

শরীর কেবলই শরীর না, ইহা শরীর শরীফ! … শরীর শরীফ বিহীন হয় না প্রেম, মজে না মজমা! মন হল, শারীরিক রসায়নের নূর-এ কেবলা, আশেকান! … অতএব নত হও ইবাদতে, আচমন করো শরীরসমগ্র/জলজ প্রপাত! … মুরশিদ, বাহো তরী, বাহো গো ত্বরী-কা, লবণের অপার রহস্য খুঁজে পাবে

লাঙ্গল বান্ধব : কৃষি ও রাধাকৃষ্ণের কৃষিতাত্ত্বিক পরিচয়

পরমা প্রকৃতি জানে, পরমপুরুষে, লিঙ্গের কাহিনী জানে শিবের লাঙ্গল! অকর্ষিত মাঠে, ‘এই থিতি থিতি’ বোলে হালের বিছাল চষে হলরেখা, মাটির জনন!… শিল্প হলো অর্দ্ধনারীশ্বর, যাহার অর্দ্ধেক শিব অর্দ্ধেক পার্ব্বতী! মন রে, কৃষিকাজ জান না, আনন্দসাধনে! মেঘলা মনের চুম্বনে, জল ঝরঝর বরিষনে অভিভূত চারণ কৃষক কালিদাস

রাঘব বোয়াল : ঔপনিবেশিক বোয়ালের আগ্রাসন চিত্র

আহা কালা, রাঘবনন্দন তুমি বোয়ালস্বভাবা!…. আহা রে রাঘব, আহা রে বোয়াল, কী এমন রূপ রস বর্ণের প্রথায় ধরি রূপ এসেছো মাৎস্যন্যায়ে, জলাঙ্গির ঢেউয়ে ভেজা হিজলডাঙগায়; করাল দাঁতের আগ্রাসনে কাঁপে চা রি ধা র!… পদ্মদীঘির জলে মাছের মেয়েরা ভুলেছে সাঁতার, ডুবডুবখেলা, ঢেউয়ে ঢেউয়ে ধিঙ্গি তালে নাচায়