আরণ্যক টিটো

সম্পাদক— প্রকৃতিপুরুষ

ত্রিশপারা জীবন

… (পরিয়াছি) গলার শোভায় রুদ্রাক্ষের মালা। … দেখিয়া তিনের লীলা, বলিলেন তিন-ই; ‘তিনটা’?! … বলিলাম, হ্যাঁ। … আবারো বলিলেন তিন-ই, কেন তিনটা? … বলিলাম অতঃপর, এই ‘তিন’ হৈল রহস্য— ‘আলিফ, লাম, মিম’— যাহার প্রকাশ (ত্রিশপারা জীবন) হৈলাম আমি কিংবা আল্ কোরান অর্থাৎ ‘যালিকাল কিতাবু’। জানে

মঈন চৌধুরী ও সমকালীন চিহ্নায়কের মূল্য উপলব্ধি

বিয়োগপর্বের অন্যতম বাতিঘর মঈন চৌধুরী, কবি, চিত্রকর, চিন্তক, তত্ত্ব ও ভাষা বিশ্লেষক। সঙ্গীতে রয়েছে তার আকণ্ঠ অনুরাগ। ভূ-সংস্কৃতিকে তিনি বিন্যাস করতে প্রয়াসী সমকালীন বৈশ্বিক চেতনায়, বিনির্মাণ দ্যোতনায়, ভেদ রেখাকে সনাক্ত করে অভেদের সন্ধানে তার যাত্রা অব্যাহত। তত্ত্বের গভীরে পৌঁছে হৃৎ-অনুভবের তাড়নায় নিজে একীভূত হোন না

বাংলা ভাষাতত্ত্বের নতুন দিগন্তে উদিত রবির প্রয়াণে শ্রদ্ধাঞ্জলি

রবি চক্রবর্ত্তী রবি চক্রবর্ত্তী, বাংলা ভাষাতত্ত্বের প্রায় শতবর্ষস্পর্শী এক নিঃসঙ্গ বনস্পতি স্থানীয় সময়, ৩ জানুয়ারি ২০২৫-র মধ্যাহ্নে পাড়ি দিলেন অগস্ত্যযাত্রায়। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, হুগলি জেলার কোন্নগর শহর নিবাসী রবি চক্রবর্ত্তী (জন্ম: ২৪ অক্টোবর ১৯২৯) যাঁর জ্ঞান ও স্নেহসান্নিধ্যে আমি ধন্য হয়েছি ও সন্ধান পেয়েছি বাংলাভাষা-সংস্কৃতির অমৃতকুম্ভের—

মিত

মিত যা কিছু সবকিছুই তার সংক্ষেপিত, অমিতের নেই সীমা। সসীমে বাস করে মিত, প্রিয় মিতবাক। মিতব্যয়ী মিত ব্যয় করে সুখে থাকে তাই, মিতভূক চিরসুখী, খুশিতে নিত্য চিত্ত পাতে। মিতভূক্ত মিতাহারী ভোগে না অম্লতায়, মিত তাই মিতা হয়ে মিতালি পাতে অহিংসায়। অমিতব্যয়ী অপরিণামদর্শী, মনোকষ্ট পরিণাম, অমিতভাণ্ডার

মায়া শহরে মধ্যরাত ও অন্যান্য কবিতা

মায়া শহরে মধ্যরাত মধ্যরাতের মায়া শহরে হেঁটে যাই … আছড়ে পড়ছে এজটেক ড্রাম বিটস নৃত্যপর উচ্ছ্বাস লোহিত কণিকায় চোখ ধাঁধাচ্ছে ক্রিষ্টাল বলের বিচ্ছুরণ তুমি সাথে থাকলেই উৎসব! জেগে ওঠে প্রাচীন কলরব … জাগরণ কড়া নাড়ে ঘুমের দরজায় স্পর্শের মত দূর … নিঃশ্বাসের সন্নিকট! তুমি সাথে

সোহেল ইয়াসিনের কবিতা

শূন্য ও জীবন যোগফল শূন্য জেনে যে জীবন বাষ্প হয়ে মিলিয়ে যায় আয়নায় তার প্রতিবিম্ব ওজনহীন হয়ে ভঙ্গিটুকু ফেলে রাখে জননী মৃত্তিকার মতন পাতাভরা অরণ্যে নির্জনতা প্রসব করে পলাশের ছায়ার পাশে একটা শূন্য ঝুলে পড়ে বেশ জরাযু খালি দেখে সে শূন্য আবার নিষেকের ব্যঞ্জনা তোলে

বখশিস

আকাশ থেকে ঝরছে বেশ অনেকক্ষণ ধরেই শ্রাবণের বৃষ্টি। থামার লক্ষণও নায়। আগামীকাল ঈদ, কিন্তু রসুলপুর গ্রামের একমাত্র বাজারে এখন দু’চারটি দোকান বাদে, আর একটি দোকানও খোলা নায়। আলাল মিয়া বসে আছে একটি দোকানের বারান্দায়, যে দোকানটিতে সারা দিন রাত পরিশ্রম করে সে। বেতনভোগী না হলেও

বার

… মৃত্যু থেকে সাড়ে এগার কদম দূরে থাকা আমরা, শূন্যের নন্দনে (ষড়ায়তনে) সাতের সত্তায় সৃজিত অ্যাটম! … মৃত্যু ও মৃত্তিকা জানে; আমাদের পরিণতি হৈল এই— ছয়টা কারকের ষড়ায়তনে সৃজিত সাতের ‘সময়’ কিংবা ‘সত্তা’ কিংবা ‘সা রে গা মা পা ধা নি’ মরণে চলিয়া গেলে মৃত্যুতে

তাজমহল: প্রযুক্তিগত ও স্থাপত্যগত বিস্ময়

তাজমহল শুধুমাত্র একটা সৌধ নয়, বরং শিল্প, বিজ্ঞান, দর্শন, সাহিত্য এবং প্রযুক্তিবিদ্যার এক সম্মিলিত রূপ। তবে আজ শুধুমাত্র এটার প্রযুক্তিবিদ্যাগত অভিনবত্ব নিয়েই আলোচনা করব। আর একদিন আলোচনা করব এই স্থাপত্যের অন্তর্নিহিত দর্শন এবং সাহিত্যে এর আর্কিটাইপ এবং আর একদিন করব মুঘল আমলে শোষণ এবং মানুষের

রুদ্র শায়কের কবিতা

নন্দনচেতনায় হলুদ বিপ্লব রাষ্ট্রবিজ্ঞানের একজন অন্ধ প্রফেসর সারাদিন লাইব্রেরী খুঁজে শুধু আমাকে পেয়েছে তাহার পাঠযোগ্য আর কোন টেক্সট নায় আমি নাকি তাহার রাষ্ট্র চেতনা আমি বেমালুম রাজনৈতিক জ্ঞান ভুলে গেছি তাহাকে সরল ভাবে জানিয়ে দিলাম রাষ্ট্রের প্রতিটি গিটে গিটে গিরগিটির বসবাস গিনগিন এসব গিটে আমি

সাজ্জাদ শাকিলের কবিতা

জোয়ার (আরুকে) শিউরে ওঠা তরল অন্ধকারে অজস্র জোনাকির হাওয়ায় ওড়ানো স্ফুলিঙ্গ! সহস্র বাজপাখির তীক্ষ্ণ দৃষ্টির মতো তোমাকে দেখে ফেলি নীলাঞ্জনা— সেখানে করুণ মিনতি ভেঙে পড়ে আচ্ছন্ন পৃথিবীর অপূর্ব এক বেদনায় সীমাহীন অভিমান উচ্ছ্বসিত হয়ে পড়ে— যেন তুমি অসহ্য প্রেমের প্রতাপে দিশেহারা সমুদ্রের উত্তুঙ্গ ঢেউয়ের ঝাপটা

শব্দের অর্থ থেকে জগতের অর্থে

[দার্শনিক ও মনীষী কলিম খানের সহযোগী এবং ‘বঙ্গীয় শব্দার্থকোষ’ ও ‘সরল শব্দার্থকোষ’ সহ আরো বেশ কিছু ভাষাতাত্ত্বিক গ্রন্থের যুগ্ম প্রণেতা, নবতিপর পরম শ্রদ্ধেয় শ্রীময় রবি চক্রবর্ত্তী মহাশয় রচিত এই নিবন্ধটির প্রথম প্রকাশ ঘটিয়াছিল ‘বঙ্গযান’-এর সহযোদ্ধা, ‘বঙ্গীয় শব্দার্থকোষ’-এর প্রকাশক সংস্থা ‘ভাষাবিন্যাস’-এর কর্ণধার শ্রীময় পূর্ণেন্দু মিত্র মহাশয়