প্রবন্ধ

এই লেখাটি সতর্কীকরণ চিহ্নের মত

ব্যাপারটা সাহিত্যের নয়, ব্যাপারটা জনপ্রিয় হওয়ার: ‘পুরস্কারপ্রদান’-এর উদ্দেশ্য যদি হয়ে থাকে পলিটিক্স, আর অনুষ্ঠান হয়ে থাকে যদি স্যাবোটাজ টু দ্যাট ক্রিয়েটিভিটি, তবে বলা যায় প্রতিষ্ঠান কতটা ক্রিয়েটিভিটির জন্য ‘পুরস্কারপ্রদান’ করে, আর কতটা পাঠকের সঙ্গে পলিটিক্স করে। অথবা এভাবেও বলা যায়— ‘ট্রাপিজ থেকে স্ট্রিপটিজ’ যা যা

বাঙ্গালা বনাম সংস্কৃত : কষ্টকল্পিত বৈপরীত্য

১— সম্প্রতিকালে যাঁহারা বাঙ্গালার বানান ও ব্যাকরণ সংস্কারের চেষ্টায় তৎপর, এক হিসাবে তাঁহারা আমাদের উপকার করিয়াছেন। তাঁহারা আমাদের চিন্তাভাবনার শিকড় ধরে নাড়া দিয়াছেন। তাঁহারা শুধু বানান ব্যাকরণের থেমে যাননি, তাঁহারা বাঙ্গালাভাষার চালচলন পর্য্যন্ত শুধরে দিতে চাহিতেছেন। তাঁহারা বানান ও ব্যাকরণকে সংস্কৃতের (অর্থাৎ সংস্কৃত বানান ও

কবিতা ভাবনা, এক : শুশ্রূষার সংস্কৃতি

কবিতার সঞ্জীবনী শক্তির কথা বলতে গেলে, অবশ্যই পাঠকের অভিজ্ঞতা এবং কবির অভিজ্ঞতাকে আলাদা করতে হবে। একটা কবিতা পাঠকের জন্য এক ধরনের মন্ত্র তৈরি করতে সক্ষম : বিধ্বস্ততাকে বিন্যাস দিয়ে কোন আকৃতি বা অভিকর্ষ ছাড়াই কবিতা অন্ধকার থেকে তার পাঠককে উদ্ধার করে; অবাধ প্রপতনের জন্য কবিতা

এডগার অ্যালান পো’র অপহৃত চিঠি এবং লাকাঁর ভাষিক নির্জ্ঞান

মার্কিন সাহিত্যিক এডগার অ্যালান পো’র অন্যতম জনপ্রিয় গল্প The Purloined Letter বা অপহৃত চিঠি। বৌদ্ধিক সমাজে গল্পটা এত সাড়া ফেলে যে, বিদ্বজনদের কাছ থেকে এর নানারকম পাঠ উন্মোচিত হৈতে থাকে। ম্যারী বোনাপার্ত, মিশেল ফুকো, জাক লাকাঁ, দেরিদা, জিজেক, হল রবিন্স এমন আরো অনেকেই এই গল্পের

‘বিনির্মাণ’ একটা প্রত্যয়ের কবিতা

এজাজ ইউসুফী জন্ম: জানুয়ারী, ১, ১৯৬০। উত্তর আধুনিকতাবাদী কবি, লেখক, সম্পাদক এবং সাংবাদিক। নব্বইয়ের দশকের সমকালীন প্রেক্ষাপটে কবিতা বিনির্ম্মাণের করণ-প্রকৌশলে ইউসুফী বিশেষ মাত্রা যুক্ত করেছেন। সাহিত্য পত্রিকা সম্পাদনার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে উত্তর আধুনিকতাবাদ ধারণার প্রবর্ত্তনে ভূমিকা পালন করেছেন একজন চিন্তার প্রবক্তা হিসেবে। [১] তাঁহার কবিতায়

বিজুর অজানা কথা

এই রচনাটা কলিম খান এবং রবি চক্রবর্তী রচিত ক্রিয়াভিত্তিক-বর্ণভিত্তিক শব্দার্থবিধি অনুসরণ করে লেখা হয়েছে। আমরা বাঙ্গালা, হিন্দী, ইংরেজী বিভিন্ন ভাষার অভিধান খুললে চাকমা শব্দের সাক্ষাৎ পাই। এই যুগের ঐতিহাসিক ভাষাতাত্ত্বিকেরা সম্প্রতি জানিয়ে দিয়েছেন যে, বর্ত্তমান পৃথিবীর সমস্ত ভাষা, যাহার সংখ্যা ৬০০০, আসলে একৈ আদি মহাভাষা

জাক লাকাঁ এবং ‘নির্ম্মিত’ মানুষ

বাঙ্গালা ভাষায় জাক লাকাঁকে নিয়ে লেখালেখি খুব একটা চোখে পড়ে না। এই কথা আমরা জানি যে লাকাঁ পেশায় ছিলেন চিকিৎসক। সাইকিয়াট্রী ছিল তাহার কর্ম্মক্ষেত্র। অথচ খোদ সাইকিয়াট্রীতেই লাকাঁ পড়ানো হয় না। এদিকে এ-ও বলা বাহুল্য হবে না যে, সাইকিয়াট্রী বিশেষত সাইকো-অ্যানালিসিসকে ব্যাখ্যা করতে গিয়ে লাকাঁ

রোদন অরণ্যেই করুন, অরণ্যৈ বোঝে মর্ম্মব্যথা

রোদন অরণ্যেই করা উচিৎ। মানুষ মানুষের ভাষা বোঝার সময়, মানবিক পরিস্থিতি হারিয়ে ফেলেছে। বৃক্ষদের দিকে তাকান, যক্ষণ মানুষ ছিল না তক্ষণো তারা প্রাণপ্রদায়ী বায়ু, সুশীতল ছায়া, ফল এবং ফুল প্রদান করেছে। তাহাদের ওপর মানুষের এত অত্যাচার সত্ত্বেও তাহাদের সেই দানের কমতি পড়ে নাই কোনদিন। বৃক্ষদের

যা কিছু হারায় গিন্নী বলেন, ‘কেষ্টা বেটাই চোর’

কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের সক্রিয় পৃষ্ঠপোষকতায় শ্রদ্ধেয় হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় বিশাল দুই খণ্ডে সমাপ্য ‘বঙ্গীয় শব্দকোষ’ রচনা করেছিলেন। এহেন প্রামাণ্য অভিধানের পাতা উল্টে দেখা যাচ্ছে ‘ছাত্র’ শব্দের অর্থ— ‘গুরুর দোষাবরণশীল’। আর ‘গুরু’ শব্দের আভিধানিক অর্থ ‘যিনি গর্ভধানাদি উপনয়ন পর্য্যন্ত সংস্কার করিয়া বেদশিক্ষা দেন’। গোল বাঁধছে এখানেই। আজন্ম সংস্কার

পাগলের পাগলদর্শন : পাগলের পরমার্থিক চরিতমানস

কোন এক পাগলের কাছে শুনেছিলাম গল্পটী— একদা এক রাজা স্বপ্নে দৈববাণী পেল— ভোরে রাজ্যজুড়ে বৃষ্টি হতে চলছে আর সে বৃষ্টির জল পান করলেই লোকে পাগল হবে। রাজার ঘুম ভাঙল— হায় হায়, এ দেখি ভোর হয়ে এল! … আকাশ মেঘাচ্ছন্ন, মূহুর্ত্তেই বুঝি বৃষ্টি নামে! পুকুরগুলোই রাজ্যের

সবুজ হোটেল

আজ থেকে পঁচিশ বছর আগের কথা। এক বহুজাতিক সার কারখানায় ট্রেনিং ম্যানেজারের চাকরী নিয়ে চট্টগ্রামে গিয়েছি। থিতু হয়েই চট্টগ্রামের কবীদের খুঁজতে শুরু করলাম। মোবাইল ফোন ও ফেসবুক কোনটাই ধরাধামে তখনো আসেনি, যোগাযোগের উপায় চিঠি ও ল্যান্ড টেলিফোন। তখন খোঁজ পাই কবীদের আড্ডাস্থল চকবাজারের এক রেস্টুরেন্ট,

নিশীর ডাক— নতুন ব্যাকরণ চাই

প্রসঙ্গ একটা কথা প্রায়ই শোনা যাচ্ছে : বাংলা ব্যাকরণের সংস্কার হোক। অনেকের মুখে দাবীটা আরও জোরালো— তাঁরা বলেন, বাংলা ভাষার নিজস্ব ব্যাকরণ চাই। তাঁদের অভিযোগ, বাংলা ব্যাকরণ নামে যে বিদ্যার চর্চ্চা হচ্ছে তা আসলে বেনামীতে সংস্কৃত ব্যাকরণ। কথাটাকে উড়িয়ে দেওয়া যায় না। ণত্ববিধান, ষত্ববিধান, সন্ধিবিচ্ছেদ,