গদ্য

সংস্কৃত ভাষা কি বাংলার জননী?

জননী শব্দটি দিয়ে সম্পর্ক নির্ণয় করা হয়। ভাষার ক্ষেত্রে সংস্কৃতের সঙ্গে সম্পর্ক তখনই মার খেয়ে যায় যখন সংস্কৃত হল মৃত ভাষা, আর বাংলা হল জীবন্ত ভাষা। শিশুরা মায়ের মুখ থেকে বাংলা শুনে শেখে। জীবিত ভাষা কখনও মৃত ভাষার সন্তান হয় না, তেমনি বিপরীতে মৃত ভাষার

বঙ্গবন্ধু হত্যা ও বাঙ্গালা-বাঙ্গালীর রাজনৈতিক হাহাকার

সেই কবে মারা গেছে, হাঁটুজল নদী, বাঁকে বাঁকে ঢেউয়ের দোলা,কাশফুলের ওড়না ওড়া বনে বাতাসের দোলা, সবুজের নৃত্য,দোলায়িত মন,মাঠের রাখাল, গরুর পালের হাঁটুজল পাড়ি,দড়ী ছেঁড়া গাভীটার পিছু ছোটা, রাখালিয়া বাঁশীটার মেঠোমনা সুরেনেচে নেচে খেলা করা ঘাসফুলটার মন, উদাস কুটীরে ফেরাসময়যাপন, ভরা কলসের আকাঙ্খা,সময়ের পটভূমিকায়, মনে, খেলছে

চিত্রশিল্পে উত্তরাধুনিকতার প্রবেশ

শিল্প সম্পর্কিত ধারণাগুলি মানব ইতিহাসের বিবর্ত্তনের সাথে সাথে পরিবর্ত্তিত ও বিকশিত হয়েছে। প্রাচীনকালে শিল্পতত্ত্ব দর্শন চিন্তা হিসেবেই স্থান পেয়েছিল। দর্শনের বহু আগেই শিল্প কর্ম্মের ইতিহাস শুরু হয়েছিল, সেইজন্য প্রাচীনকালে দর্শন শাস্ত্রের সূচনার পর পরৈ তাহার মধ্যে বিদ্যমান শিল্প-সাহিত্যের বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। শিল্প শব্দটার ভেতর

ভ থেকে ভাষা

‘ভ’ বর্ণের অর্থ ভাতি যুক্ত যে অর্থাৎ যে সত্তা অস্তিত্বলাভ করে দীপ্তমান। ভ-এর আধার— ‘ভা’ ভা-এর দিশাগ্রস্থ বিচ্ছুরণ— ‘ভাষ’ ভাষ-এর আধার— ‘ভাষা’ অর্থাৎ যে কোনো শোভমান সত্তা নিজেকে যে সব শব্দ, রস, রূপ বা গন্ধের মাধ্যমে প্রকাশ করে তাকেই তার ভাষা বলা যায়। তাই পাখীর

চন্দ্রবিন্দু কথা

সংস্কৃতে ং কে বিন্দু (.) দিয়েও লেখা হয়। আমাদের প্রাচীন শাস্ত্রমতে বিন্দু থেকেই এই মহাবিশ্বের সৃষ্টি এবং সৃষ্টির আদি মহাশব্দ এই ‘ং’ (ওম > ওঁ) ধ্বনি যা আবার ভাষার জগতে ‘অব্যক্ত’ রহস্যরূপিনী হিসেবে পরিচিত। সে যাই হোক, রহস্য রূপিনী ‘ং’ এর আরো পাঁচটি পঞ্চ-বর্গীয় রূপ

অ্যাবসার্ডিটীর আলোকে ‘ওয়েটিং ফর গডো’ ও ‘কালবেলা’

Absurd এর বাঙলা প্রতিশব্দ উদ্ভট। সঙ্গীতের ভাষায় Absurd অর্থ বেসুরা। সাহিত্যে Absurd তত্ত্ব জনপ্রিয়তা পায় নাট্যকার স্যামুয়েল বেকেটের (১৯০৬-১৯৮৮) মাধ্যমে। এছাড়াও ইউজিন আয়োনেস্কো, আর্থার এ্যাডামভ, এডওয়ার্ড এ্যালবি, হ্যারল্ড পিণ্টার, ফার্নান্দো এ্যারাবাল Absurd নাটকের ধারায় প্রধান নাট্যকার। তবে Absurd নাটককে তত্ত্বাকারে প্রতিষ্ঠা দেন হাঙ্গেরীয় সমালোচক মার্টিন

ক্রিষ্টোফার কলম্বাস এবং অপ্রিয় কথা

উত্তর ঔপনিবেশিক ধারণা গড়ে ওঠেছে মূলতঃ গত শতাব্দীর দ্বিতীয়ার্দ্ধ থেকে, এটী যেমন বহুল সমাদৃত আবার ঠিক তেমনভাবেই বহুল বিতর্কিতও! এর ইংরেজী প্রতিশব্দ Post Colonialism, অর্থাৎ উপনিবেশের পরের অবস্থা। এর থেকে একটা একটা ধারণা মেলে যে উত্তর ঔপনিবেশিক মতবাদ একটা নির্দ্দিষ্ট সময়ের কথা বলছে, পাশাপাশি এটাও

মানবশরীর ও বর্ণমালা

এই নিবন্ধে বাংলা বর্ণমালার বর্ণের আলোয় মানুষের শরীরে বিভিন্ন অংশ এবং জীবনদর্শনের আলোচনা করার চেষ্টা করব। শরীরের প্রতিটী অংশের নাম তার কর্ম্মানুসারে হয়। প্রথমে মাথা দিয়ে কথা শুরু করি। মাথা শব্দে ম বর্ণে সীমায়ন, থ বর্ণে থাকন, আ বর্ণে আধার বুঝা চলে। মা (সীমায়িতকরণের আধার)

পাগলের পাগলদর্শন : পাগলের পরমার্থিক চরিতমানস

কোন এক পাগলের কাছে শুনেছিলাম গল্পটী— একদা এক রাজা স্বপ্নে দৈববাণী পেল— ভোরে রাজ্যজুড়ে বৃষ্টি হতে চলছে আর সে বৃষ্টির জল পান করলেই লোকে পাগল হবে। রাজার ঘুম ভাঙল— হায় হায়, এ দেখি ভোর হয়ে এল! … আকাশ মেঘাচ্ছন্ন, মূহুর্ত্তেই বুঝি বৃষ্টি নামে! পুকুরগুলোই রাজ্যের

শব্দের ইন্দ্রজাল : দেহ ও শরীর, দেহ ও মন

পথ চলতে কারো সঙ্গে দেখা হলে আমরা বলি, “কেমন আছেন?” ফোনকলে সালাম বিনিময়ের পর আমরা কুশলাদি জানতে বলি, “শরীর কেমন?” আমরা আলাদা করে জানতে চাই না মনটা কেমন আছে। তবে হুমায়ুন আহমেদ-এর এক নাটকে একটা সংলাপ ছিল এমন, ‘মনডা ভালা?’ দেহের খবর নিলে মনের খবর

মাতৃতান্ত্রিক সমাজব্যাবস্থা

যখন থেকে মানুষের সংঘবদ্ধ জীবনযাপনের গোড়াপত্তন তখন থেকে আজ অবধী বেশ কয়েকধরণের সমাজব্যাবস্থা লক্ষ্য করা গেছে। তার মধ্যে মাতৃতান্ত্রিক সমাজব্যাবস্থা একটী। আর একথা প্রথমেই বলে রাখা প্রয়োজন যে, মাতৃতান্ত্রিক সমাজব্যাবস্থা হল মানুষের সমাজ ও সভ্যতা স্থাপনের সময়কার প্রথম ও আদি সমাজব্যাবস্থা। একথার পক্ষে যুক্তি পাওয়া

পোষ্টমডার্ণিজম ও এর বৈশিষ্ট্য

Postmodern শব্দটীর বাংলা প্রতিশব্দ হিসেবে উত্তরাধুনিক, উত্তর-আধুনিক, আধুনিকোত্তর, অধুনান্তিক শব্দের প্রয়োগ রয়েছে। এসব শব্দের বিভিন্ন মানে রয়েছে, শব্দের প্রয়োগকৌশল শব্দের মানে নির্দ্ধারণ করে দেয়। ফলে Postmodern শব্দেরও বিভিন্ন মানে বিভিন্ন জনের কাছে প্রতিভাত হয়। Postmodern শব্দটী সচেতনভাবে প্রথম প্রয়োগ করেন ফরাসী চিত্রসমালোচক ও শিল্পী জন