গদ্য (Page ২)

ব্যাখ্যা বিজ্ঞান

(সাহিত্য পাঠ এবং সাহিত্য অনুধাবন দুটো আলাদা ব্যাপার।) সাহিত্যের অতি সাধারণ পাঠকের মুখ থেকে অনায়াসে ব্যাখ্যা বিজ্ঞানের কথা শোনা যায় না। ইংরেজী Hermeneutics (বাংলা হের্মেনেত্য, বাখ্যা বা দ্বিভাষিকতার বিজ্ঞান) বলতে, সাধারণত লিখিত শব্দ থেকে মর্ম্মার্থ বের করা বোঝায়। ব্যাখ্যা বিজ্ঞানে অর্থ উদ্ধারের প্রক্রিয়ার সাথে ঠিক

কুবলা খানের জগতে

এক— কখনো কখনো বাস্তবতা থেকে দূরে সরে গিয়ে কবীরা স্বপ্ন দেখতে পছন্দ করেন। নির্ম্মাণ করেন নিজস্ব মায়ার শহর। শব্দের প্রতিবেশিতার ফাঁকে ফাঁকে সুবাসিত হয় পরাবাস্তব সৌন্দর্য্য। যেমন, কোলরিজের কুবলা খান। কুবলা খানের জানাডুর মতন রবীন্দ্রনাথও ‘উজ্জয়নিপুর’ তৈরী করেছেন। পবিত্র আলফ নদীর মত, রবীন্দ্রনাথেও শিপ্রানদী বয়ে

গ্যাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেস ও নিঃসঙ্গতার শতবর্ষ

বিশ শতকের অন্যতম প্রভাবশালী লেখক গ্যাব্রিয়েল হাসে ডি লা কনকর্ডিয়া গার্সিয়া মার্কেস (Gabriel Jose de la concordia Garcia Marquez), তিনি গ্যাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেস (১৯২৮-২০১৪) নামেই সমধিক পরিচিত। তিনি কলম্বিয়ার ইতিহাস ও ঐতিহ্য দ্বারা বিশেষভাবে অনুপ্রাণিত হলেও সমগ্র ল্যাটিন আমেরিকার সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও ইতিহাসকে তাঁর লেখনীতে

মিমেসিস

(বাস্তব নয়, তবে সত্য হতে পারে) [মিমেসিস (Mimesis) কে বলা যেতে পারে ‘প্রকৃতির আয়না’। প্রাচীন এই গ্রীক শব্দটির গ্রহণযোগ্য বাংলা প্রতিশব্দ হতে পারে ‘অনুকরণ’। অনুকরণ বললে আবার নিন্দাসূচক অর্থে কোন কিছুর ‘শুধু মাত্র কপি’ করার ব্যাপারটাও চলে আসে। ‘রূপায়ণ’ বললেও যথেষ্ট বলে মনে হয় না।

স্বস্তিকা চিহ্নের আদ্যোপান্ত

মানুষ স্বভাবগতভাবেই প্রতীক বা চিহ্ন ভালবাসে। এই চিহ্ন ব্যবহার কবে থেকে মানুষ শুরু করেছে তার কোন নির্দ্দিষ্ট সময়সীমা নির্দ্ধারণ করা সম্ভব নয়, মানুষ নানা কারণে নানা ধরণের প্রতীক বা চিহ্ন ব্যবহার করে আসছে সেই প্রাগৈতিহাসিক কাল থেকে। মানুষের কাছে চিহ্ন বা প্রতীক বিশেষ গুরুত্ব বহন

ফ্যাসিবাদ

Fascism এর বাংলা প্রতিশব্দ বলা যায় ফ্যাসিবাদ। এই শব্দের সাথে প্রায় সকলেই মোটামুটি পরিচিত। ফ্যাসিবাদ কাকে বলে সে সম্পর্কেও অনেকেরই স্পষ্ট ধারণা না থাকলেও তা চিহ্নিত করার মত জ্ঞান অনেকেরই আছে। Fascism শব্দের উৎপত্তি ইতালীয় শব্দ Fascio হতে, যার অর্থ Bundle বা Sheaf. এর থেকে

চিনিফানা : ফানাফিল্লা তত্ত্ব ও বিবিধ নির্য্যাস

… রচয়িতা মারা গেছে সৃজন বর্ষায়, খুঁজেও পাবে না তাকে জলের বাসরে! … জলের হৃদয়ে মিশে চিনি হল ফানা! মিশে জলজ তরলে হল গো সরলা! হল আমা হতে তুমি— আমি, তুমিময়! … বন্ধু, আমি কি তোমাকে চিনি, চিনির প্রকারে, চায়ের লিকারে? বল, কী ভাবে মিশিবে

ডিসিপ্লিন এ্যান্ড পানিশ : দ্যা বার্থ অব দ্যা প্রিজন

বেকন যখন বলেন “knowledge is power” ফুকোই বলেন “না, power is knowledge” ক্ষমতা জড়িয়ে আছে প্রতিটি সামাজিক সম্পর্কের পরতে পরতে। ক্ষমতা শুধু রাষ্ট্রযন্ত্রে বা রাজনৈতিক অঙ্গনে নয়, এটা বিস্তৃত হয়ে আছে হাসপাতালে, ফ্যাক্টরীতে, স্কুলে, উপসনালয়ে, পরিবারে। এবং প্রত্যেকটা প্রতিষ্ঠান কারাগারের মত আচরণ করে এবং মানুষকে

গ্রামপতনের ধ্বনি : অরণ্যনগর ও আগামী সভ্যতার আবাসন

………… নাগরদোলায় দোলে নগরজীবন! নাগরিকা, দেখে জানালায়, দূরদেশ— গ্রাম— হাতছানি!… আর প্রাসাদী শাড়ীর কারূকাজে ঢাকে দেহের সুষমা— ফুল, পাখী, প্রজাপতি, বনানী, পাহাড়, নদী… নাগরদোলায় দোল খেয়ে খেয়ে আধোঘুমে ভাবে, জলের সোহাগভরা কাঁখের কলসে পিপাসা মেটানো নদীর যুবক, হাঁটে কুয়াশাঘেরা আড়ালে, নদীবাংলার কূলে বাজে বাঁশী, বাঁশীর

পরিবর্ত্তনা চৌধুরাণী : পরিবর্ত্তন বিষয়ক খসড়া

জংলা নদীর ধারে ধ্যানী বক, আমাকে ধর্ম্মের শিক্ষা দেয়, কেমন ভাবের মর্ম্মে দাঁড়িয়ে থাকতে হয় এক পায়ে; যেমনটা আছে মাননীয় তালগাছ! … পাঠশালা, ধর্ম্মশিক্ষা জানে, বারবার লাড্ডু খাওয়া আমি, রসার্থে সন্ধান করি ভবাপাগলার মালাই বিতান! … মাড়াই পথের মোড় নিতাইগঞ্জের। … জংলা নদীর ধারে (ধ্যানী

শরীর শরীফ : দেহ থেকে মন, অনির্ব্বাণ যাত্রা

শরীর কেবলই শরীর না, ইহা শরীর শরীফ! … শরীর শরীফ বিহীন হয় না প্রেম, মজে না মজমা! মন হল, শারীরিক রসায়নের নূর-এ কেবলা, আশেকান! … অতএব নত হও ইবাদতে, আচমন করো শরীরসমগ্র/জলজ প্রপাত! … মুরশিদ, বাহো তরী, বাহো গো ত্বরী-কা, লবণের অপার রহস্য খুঁজে পাবে

‘সবুজপত্র’ বাংলাসাহিত্যের উজ্জ্বলতর গদ্য অধ্যায়

‘ঠাকুরমার ঝুলি’ লিখে দক্ষিণারঞ্জন মিত্র মজুমদার তখন সারাদেশে ব্যাপক পরিচিত। তিনি একবার অসুস্থ হয়ে পড়লেন। কারণ? ‘সবুজপত্র’-এ কবিতা পাঠিয়েছেন। অথচ ছাপা হচ্ছে না। এ-যন্ত্রণায় কাতর লেখক। কবিতাটি ছাপা হলেই তিনি সুস্থ হয়ে উঠবেন। যে লেখক সূক্ষ্ম রসিকতায় সাধারণ পাঠকের চিত্ত আলোড়িত করে এত যশ-খ্যাতি কুড়িয়েছেন,