পুনঃপঠন

শব্দের অর্থ থেকে জগতের অর্থে

[দার্শনিক ও মনীষী কলিম খানের সহযোগী এবং ‘বঙ্গীয় শব্দার্থকোষ’ ও ‘সরল শব্দার্থকোষ’ সহ আরো বেশ কিছু ভাষাতাত্ত্বিক গ্রন্থের যুগ্ম প্রণেতা, নবতিপর পরম শ্রদ্ধেয় শ্রীময় রবি চক্রবর্ত্তী মহাশয় রচিত এই নিবন্ধটির প্রথম প্রকাশ ঘটিয়াছিল ‘বঙ্গযান’-এর সহযোদ্ধা, ‘বঙ্গীয় শব্দার্থকোষ’-এর প্রকাশক সংস্থা ‘ভাষাবিন্যাস’-এর কর্ণধার শ্রীময় পূর্ণেন্দু মিত্র মহাশয়

ভাষায় ঔপনিবেশিকতা : প্রাচীন ভারতে ম্যানেজমেণ্ট ও বাৎস্যায়ণের কামসূত্র

ভাষায় ঔপনিবেশিকতা : প্রাচীন ভারতে ম্যানেজমেণ্ট ও বাৎস্যায়ণের কামসূত্র ‘শাস্ত্র’ শব্দের অর্থ ‘শাষনসাধন’, অর্থাৎ যাহার দ্বারা শাষন করিবার কাজটী সাধন করা যায়, অর্থাৎ কিনা ‘শাস্ত্র’ মানে শাষনের হাতিয়ার। ভারতীয় কোষকারগণ জানাচ্ছেন যে, শব্দের এইপ্রকার অর্থ কাহারো স্বকপোলকল্পিত নয়, শব্দটীর ভিতরেই তাহা পাওয়া যায়। যে সকল

ধর্ম্ম শব্দের অর্থ কী?

ধর্ম্ম শব্দের অর্থ কী? ১) ব্যুৎপত্তি নির্ণয়— ধৃ + ম (মন্)— কর্তৃবাচ্যে। (বঙ্গীয় শব্দকোষ, হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়— সংক্ষেপে ‘ব.শ.’।) ২) ক্রিয়াভিত্তিক-বর্ণভিত্তিক অর্থ— ধর্ মিতি মিত যাহাতে। (বঙ্গীয় শব্দার্থকোষ, কলিম খান ও রবি চক্রবর্ত্তী— সংক্ষেপে‘ব.শব্দা.’)। শরীরসাধন যে কর্ম্মের অপেক্ষা করে। (অমরকোষ)। লোকধারণ করে যে। (ব.শ.)। ৩) অভিধানাদিতে

নাপিত ও সার্জনের দৃষ্টিতে বাংলা বানান-সংস্কার

পৃথিবীর প্রথম পাস করা শল্যবিদ বা সার্জনদের মধ্যে অনেকেই প্রথম জীবনে পেশায় নাপিত ছিলেন। ইংল্যান্ডে এখনও ডাক্তারদের ‘ডক্টর’ এবং সার্জনদের ‘মিস্টার’ (নাপিত) বলার রেওয়াজ আছে (সার্জনদের ডক্টর বললে তাঁরা নাকি অপমানিত বোধ করেন!)। মধ্যযুগে ইওরোপের নাপিতেরা দলে দলে প্যারিস বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিল শল্যবিদ্যায় ডিগ্রি নিতে।

বাঙ্গালাভাষার বানান-সমস্যা সমাধানের পথ (১ম খসড়া)

এক — বাঙ্গালাভাষার বানানে ব্যাপক নৈরাজ্য দেখে রবীন্দ্রনাথ তা দূর করার কথা ভাবেন ১৯৩৫ সালে। নিজেই তা দূর করবেন, এমন সময় বা উপায় নিশ্চয় তাঁর হাতে ছিল না। তাই তিনি কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য্য শ্রীযুক্ত শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় মহাশয়কে এ বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করতে অনুরোধ করেছিলেন।

কালো মেয়ের পায়ের তলায় দেখে যা আলোর নাচন

            “কালো মেয়ের পায়ের তলায় দেখে যা আলোর নাচন।              রূপ দেখে দেয় বুক পেতে শিব যার হাতে মরণ বাঁচন।              আমার কালো মেয়ের আঁধার কোলে শিশু রবি শশী দোলে;

‘ধ্বনি’, ‘বর্ণ’ ও ‘বানান’ শব্দগুলির ‘ক্রিয়াভিত্তিক-বর্ণভিত্তিক’ অর্থব্যাখ্যা

[কেন কলিম খান ও রবি চক্রবর্ত্তী তাঁহাদের উদ্ভাবিত শব্দার্থতত্ত্ব ও বানানবিধিকে ‘ক্রিয়াভিত্তিক-ধ্বনিভিত্তিক’ না বলে ‘ক্রিয়াভিত্তিক-বর্ণভিত্তিক’ শব্দার্থতত্ত্ব ও ক্রিয়াভিত্তিক-বর্ণভিত্তিক বানানবিধি’ বলে সংজ্ঞায়িত করেছেন এবং তাহার পিছনে তাঁহারা কী ধরণের যুক্তি-দর্শন-ভাষাবিজ্ঞান সম্বলিত ভাব-ভাবনায় উদ্বুদ্ধ হয়েছিলেন তাহা অনুধাবন করিতে এই ধ্বনি, বর্ণ প্রভৃতি সংজ্ঞার সঙ্গে পাঠকের সম্যক ধারণা

যোজনগন্ধবিকার : ‘সিষ্টেম ডিজাইনিং’-এর সমস্যা

‘শ্রীভগবান কহিলেন … হে ভারত। মহৎ ব্রহ্মৈ আমার যোনি। তাহাতেই আমি গর্ভ নিক্ষেপ করি। তাহা হইতেই সর্ব্বভূতের উৎপত্তি হয়।’ … গীতা ১৪ : ৩। ‘There are other pitfalls, including the widespread practice of manipulating information. Public relations people, for example, often put out press releases

বাঙ্গালাভাষীর ছড়ায় যা সব ছড়ানো আছে [শুধুই অর্থহীন ছড়া! না কি উন্নততর সামাজিক চেতনার জীবন-দর্শন!!!]

‘ইকড়ি মিকড়ি চাম-চিকড়ি’ কিংবা ‘চাঁদ উঠেছে, ফুল ফুটেছে’, ‘তাঁতীর বাড়ী ব্যাঙের বাসা’— এ’ধরনের ছড়ার অর্থ হয় না বলেই আমরা জানতাম। এইসব ছড়ায় নাকি ছন্দ মেলানোর জন্য প্রচুর অর্থহীন ধ্বন্যাত্মক শব্দ রয়েছে, কিন্তু কোনো মানে নেই। এখন দেখা যাচ্ছে, সে ধারণা ভুল। বাঙ্গালাভাষীর এই ছড়াগুলি অত্যন্ত

একটা চিঠি ও একটা জাতির ভাগ্য

একটা ছোট ঘটনা, একটা আলগা মন্তব্য, কি একটা ছোট তথ্য প্রকাশ হ্ওয়া বা না হ্ওয়ার ফলে কি ইতিহাসের গতিপথ পাল্টাতে পারে? সাধারণ মানুষ তো বটেই, এমনকি ইতিহাস-বেত্তারাও কোন স্থির সিদ্ধান্তে আসতে পারেননি। তবে মনে হয়, ব্যক্তি বা সমাজ দুইয়ের জীবনেই কিছু পরিণতি থাকে অনিবার্য্য এবং

বিশ্বকর্ম্মা পূজায় ঘুড়ি ওড়ান হয় কেন

অনেক সময় সবচেয়ে সহজ ব্যাপারের পিছনেই থাকে সবচেয়ে কঠিন সত্য। আপেল মাটিতে পড়ার চেয়ে সহজ সরল ঘটনা আর কী হতে পারে! কিন্তু তাই নিয়ে যখন প্রশ্ন তোলা হয়, তখনই টনক নড়ে। সত্যিই তো, আপেল কেন মাটিতে পড়ে? কেন সোজা দিগন্তের দিকে ছুটতে শুরু করে না?

মৌলবাদ : তত্ত্ব

[মূল প্রবন্ধটির নাম ‘মৌলবিবাদ থেকে নিখিলের দর্শনে’ যা চারটি অধ্যায়ে বিভক্ত – প্রথম অধ্যায়ের নাম (১) “মৌলাব্দঃ তত্ত্ব” এবং যা আলোচ্য নিবন্ধের বিষয়বস্তু। বাকী তিনটি অধ্যায়ের নাম যথাক্রমে – (২) মৌলবাদঃ তথ্য, (৩) মৌলবাদঃ প্রেক্ষাপট, এবং (৪) উপসংহার। প্রথম অধ্যায় অর্থাৎ “মৌলবাদঃ তত্ত্ব” ছয়ভাগে বিভক্ত