গল্প (Page ৩)

সুফিকণিকা : পর্ব্ব এক

[শত শত বছর ধরে সুফী সাধকরা তাদের জীবনের অভিজ্ঞতার কথা বলতে ছোট ছোট গল্প ব্যবহার করতেন। অল্প কথায় সহজ ভাষায় সুফী সাধকরা তাদের অর্জ্জিত জ্ঞান ও উপলব্ধির কথা জানাতে পারতেন যা হাযার হাযার পৃষ্ঠার বর্ণনায়ও হয়ত দুঃসাধ্য। আমার সংগ্রহের সেইসব জ্ঞান ও উপলব্ধির কয়েকটি এখানে

গ ল্ প : জনন

“কিছু বলবি! বইটা কেমন লাগল বল্।” ছিপি জবাব দেয়, “ভয় লাগছিল। কয়েক পাতা পড়েছি। আচ্ছা, তুই কেমন করে লিখিস বল্তো! আমি তো পারি না”। “সবাই কি সব একই রকম পারে! এই যেমন তুই প্রশ্ন কর্‌তে পারিস, আমি পারি না। তোর জনন ক্ষমতা তোর কথায়, প্রশ্নের মাধ্যমে।

তেপান্তরের পাথার

তেপান্তরের পাথার পেরোই রুপকথার… বাড়িশুদ্ধ সবার মন খারাপ, ক্ষেতের ধান পেকে আসছে, অথচ বৃষ্টি থামার নাম নেই। সবচেয়ে বেশি মন খারাপ বড় চাচার। বড় চাচা মুখ ভার করে বারান্দায় পিঁড়ি পেতে হুক্কা টানছে। হুক্কার বিষয়টি তন্ময়ের বেশ লাগে, ছিলিমের ভেতর কালো টিক্কায় আগুন ধরিয়ে টানতে

সম্প্রদানে সপ্তমী

পিপীলিকা পিপীলিকা— ছয় পায়ে পিলপিল চলি… তন্ময়ের মন কিছুটা দমে গিয়েছিল যখন বৃষ্টি থামার নামগন্ধ নেই। ভেবেছিল ছুটির কয়দিন আনন্দের সাথে বেড়াবে, মাঠে-ঘাটে ছুটে বেড়াবে, তা নয়, একটানা বৃষ্টি শুরু হল। কিন্তু এই মুহূর্ত্তে তন্ময়ের মন ভাল হওয়া শুরু হয়েছে, কারণ ভাল লাগার অনেক কারণ

তিনার আঁকা ষাঁড়ের ছবি

তিনা তা’র আম্মুকে বলল, জান আম্মু, আমার খাতায় আঁকা ঐ লালরঙের ষাঁড়টা, আমাকে দেখলেই শিং দিয়ে গুঁতা মারার জন্য ফোঁসফোঁস করে তেড়ে আসে। তাই আমি দড়ী দিয়ে কষে বেঁধে রেখেছি। তা না হলে দুষ্টু ষাঁড়টা আমাকে মাথায় তুলে আছাড় দিত। আমি নাকি ওকে ঠিকমত আঁকতে

আসাদের শার্ট

…পরাণপ্রিয়, হ্যাঁ হ্যাঁ পরাণপ্রিয়ই, অন্যরা হয়ত বলত ‘প্রাণপ্রিয়’, কিংবা ‘প্রাণের চেয়েও প্রিয়‘, কিংবা ‘প্রাণের মতো প্রিয়’, কিন্তু সেলিমিঞার কাছে তা ‘পরাণপ্রিয়’ই। এটা কিন্তু সে সচেতনভাবেই করে, সত্যি বলতে কি, আগাগোড়াই তার আনকমনে ভরা। নামেও ধাঁধা। সেলিম মিঞা নয়, সেলিমিঞা। হিরোর নামে নাম, তাতে কি, নাম

এ মাদার অফ প্যালেস্টাইন

এই যে ভাই শুনছেন– আমার কিছু বলবার ছিল, আপনারা কি শুনবেন দয়া করে?   তার আগে বলুন আপনার নাম কি, পরিবারে বেঁচে যাওয়া সদস্য কতজন, কত জন হামাসের যোদ্ধা? তার আগে আমার শিশু ইয়াসিনকে গ্রামের গোরস্থানে দাফনের ব্যাবস্থা করুন– লাশটা গলে যাচ্ছে… বুকের সাথে মিশে

বদল অথবা অবিশ্বাসের ক্লান্তি

পায়ের কাছে গড়িয়ে এসেছে ছায়া, লম্বা হৈমন্তী বিকেল। এরকম গাঢ় হলুদ রঙের রোদ মেখে আছে স্মৃতির নিমফুল।আমি তার শবের ওপর হেঁটে মাঠে যাই রোজ।মাঠগুলো আমাদের সবুজাভ স্বপ্নের মতো মনে হয়।ফিকে হয়ে আসা ভোরের মতো আগেকার ঘাসের ঘন রঙ আর মনে পড়ে না। আগেকার ঘাসের নরম

মা

জায়েদা বেওয়া স্বপ্ন দেখছিল। তার নয়নেরমণি কলিজার ধন তাদের তিন শতাংশ ভিটামাটির জমিন ছেড়ে সাত আসমানের উপরে উড়ে যাচ্ছে। তিনি স্বপ্নের ভেতরেও অবাক হন, ও মুরাদ তুই কেমনে উড়তিছিস বাপ? মুরাদের চোখ ভেজা ভেজা। ছায়া মাখা। শরীর ছুঁয়ে মেঘ ঘিরে যাচ্ছে। কত রঙের মেঘ। যেন

গাছঠাকুর

অমরাবতীর তীরে ছোট্ট ছনের ঘরের উঠোনে বৃষ্টি পড়লেই কাদা জমে যায়। প্লাবনের জল ঢুকে পরে ঘরে। নদী আর নদীর পাড় আলাদা করে চেনা যায় না। বানের জলে ভেসে যায় কতশত গাছ আর পশু। সবাই কেঁদে কেঁদে উঠে, ক্ষমা করো অমরাবতী, ক্ষমা কর। সেই ঘরের এককোণায়

অসামান্য অতিথি

তার একটা আলাদা রকমের দীপ্তি ছিল, না হলে কী এই আমি অত সহজেই আলোকিত হই! সে ছিল এক সম্মোহনী আলো। আমরা দু জনে সেই কবে জলের মধ্যে ঘর বেঁধেছি ‘জীবনের প্রচুর ভাঁড়ার’  শূন্য করে দিয়ে! দু’জনের প্রথম যৌবন যে নিয়মে চলেছে, তা অচল এখন ।

আট কুঠুরি নয় দরজা

— সমরেশ মজুমদারের একটি বইয়ের নাম “আট কুঠুরি নয় দরজা”। আট কুঠুরি নয় দরজা মানে কী, লিমন ভাই? : নীলা, প্রথমে একটি মজার কথা বলি, অনেক সময় প্রেসক্রিপশনে লিখতে দেখা যায়— Rx: Antazol nasal drop দুই ফোঁটা করে দুই নাকের ছিদ্রপথে দিনে ৩ বার —