কবিতা (Page ৩)

টেক্সটিং

তোমার জন্যে মেঘমল্লার, আকাশ ছেঁচে ঝিরি ঝিরি বৃষ্টি, এই অবেলার বর্ষণে ভিজবে কি না ভেবে দেখতে পার… পরদিন সকাল বেলায় রোদ্দুর মাখা সুপ্রভাত বলে আলো জ্বেলে দিলে দিন দুপুরে… উত্তুরে রেল গাড়ি গোলাপ বন পেরিয়ে উষ্ণতার দিকে চললো, ব্যস্ত দিনমান কেউ কি বলবে থেকে থেকে,

জ্বরের ঘোরে

তোমার জ্বর গায়ে মেখে হাঁটছি কুয়াশার শহর জেট ল্যাগ পেরুচ্ছি, মাইলেজ বাড়ছে স্মরণ যাপনে… ট্রেঞ্চ কোটের পকেট বোঝাই উষ্ণতায় তোমার ভর দুপুর উইন্ড চিল মাইনাস কুড়ি, হু হু হাওয়ার ঝাপটা চোখে মুখে… টুপি দস্তানা মাফলারে ওম খুঁজছো, ওতে কি আর যথেষ্ট হয়? হবে নাকি গরম

পাঁচ মিনিট বিরতি

তখন তুমুল বৃষ্টি তোমার শহরে আমার শহর বরফের রোজনামচা লিখে যায়, আবহাওয়ার পূর্ব্বাভাস বলে সুপ্রভাত প্রতিদিন… তুমি বৃষ্টির গল্প শুরু করেই চিরাচরিত পাঁচ মিনিট বিরতিতে… এদিকে খুব মিহিন বরফ কুচিরা উড়ছে ঠায় দাঁড়ানো ল্যাম্পপোস্টটার হলদে আলোয়, ঘড়ির টিকটিক পাঁচ মিনিট পেরিয়ে পরের ঘন্টাগুলো ঘুরে ঘুরে

ব্যাকপ্যাকার্স ভ্রমণ

তারপর শহরের শীত গ্রীষ্মের অলিগলিতে হেঁটে হেঁটে চারচক্ষু গ্র্যাফিতি… সাঁকো পেরুনোর অভিলাষ! স্প্রে পেইন্ট এর উদাসীন পিচকিরি! ঘাসের ফলায় সন্ধানী লেন্স, পেইন্ট ব্রাশের এক একটা অকপট স্ট্রোক… গতিময় ক্যানভাস! দ্বিমাত্রিকতা পেরিয়ে ত্রিমাত্রিক উচাটন রঙ! রেলব্রিজকে বুকে ধরে একদিন রেলব্রিজের ওপার, আরো দূর পিছুডাকের চারু ধূপছায়া,

অজুহাত

সিগারেট খাওয়ার ছল করে কি ব্যালকনীতে গেলে? হয়তো এই সামান্য একটু উৎকণ্ঠার জন্যে তোমাকে খুঁজে পেতে বের করতে হল মহার্ঘ্য নিরিবিলি। পেয়েছিলে খুঁজে নিশ্চয়ই, নচেৎ এই অসময়ে তোমার খানিক অবাক করা, সম্ভবতঃ অকৃত্রিম উদ্বেগ ‘তুমি আগুন থেকে নিরাপদ দূরত্বে আছো তো?’ গ্লোবাল নিউজের নাড়ি নক্ষত্র

অগ্নিতমা

তবুও মোমবাতীর কম্পমান শিখায় জ্বালি আতশী প্রাণ, আইরিশ রোজ সুঘ্রাণ! রাতভর আলো-ছায়া কোলাজ সূফিনাচ ঘূর্ণনে! চেনা চিরকুট পাঠিয়ে সন্ধ্যে নেমেছিল … নাগরিক অরণ্যে একফালি কৃষ্ণচূড়া আগুণ ছটফটে কার্ডিনাল পাখিটার কমলা ঝিলিক ডানায়! জাদুকরী আঙুলে আগুণ ছুঁয়ে অগ্নিতমা তুমি! সন্ধ্যের রং বদলে যেতে যেতে ফিকে অন্ধকারে

শাহজাদী রাত

রাত্রী ঘুম ঘুম সান্দ্র হয়ে এলে নিজেকে শাহজাদী মনে হয় ঢেউ তোলে মায়াবী মসলিন মিয়া তানসেন সুর ধরেছেন মধ্যরাতের দরবারী কানাড়া! আলোটা নিভিয়ে দাও জেগে থাক নক্ষত্রের পাহারা! অন্ধকার চোখে সয়ে গেলে খুঁজে নেব হারিয়েছে যা কিছু প্যান্ডোরার বাক্স যেদিন হাত ফসকে … প্রথম গোলাপ,

বুলেট ও বাগান

অস্ত্র ব্যবসায়ীদের বল হাওয়াই মিঠাই-এর কারখানা দিতে সন্ত্রাসের হুংকার বন্ধ, নিমেষেই ভাবা যায়, এখনও লিঞ্চিং দিনের আলোয়? কেবল ওদের রঙ কাল বলেই উল্লাসে মেতে ওঠ মারণ খেলায় এইবার তোমাদের অস্ত্র আইন বদলাও গালভরা মানবতাবাদী বিবৃতি দিলেই সম্পূর্ণ হয় না মানবতার পক্ষে সাফাই! মাত্র তিন মাস

শীত আসছে

জানালায় মেঘ জমেছে স্মৃতি বরষা জাতিস্মর সময় আমি, নাকি আমি নই? অথবা তুমি, নাকি অন্য কেউ? আয়নায় অচেনা চোখ! পলকে চলকায় পলাতক জল! জানালা কত কী খুঁজে আনে! তন্ন তন্ন করে ভূ-সমুদ্দুর! কিশোরী নির্জনতা সাবলীল ডানায় উড়ে আসে এক একটা দশক, খুব কি অন্য রকম?

অনর্থযাপন

ঘরের ভেতরে আমি অন্য এক আকাশের ছবি দেখি, জানালার পর্দ্দাগুলি চিরকাল গোপনতা খুঁজে। জানি, সমুদ্রশৈবাল কোনোদিন নিজের দেহের ভাঁজে সমুদ্র খুঁজে না, তবু ধ্বসে পড়ে বালিয়াড়ি, চকমকি ঠুকে কেউ আগুন জ্বেলেছে তবে? কারা আজ জলের গভীরে দিল ডুব, তুলে আনে শঙ্খের গুঞ্জন, তবু দিগন্ত প্রাসারিত

নীরবতার সঙ্গীত

জলের নিপুণ থৈ থৈ হতে তুমি হে জলের দেবতা কোন্ সে নবীন সঙ্গীত বাজালে সমুদ্রবেহালায়? আমি তারই অন্ধ অনুচর, রাতভর তাই এই নক্ষত্রবিভূতি? এককোটি আলোকবর্ষ দূরে অবশেষে নিঃশেষ হয়ে যেই তারা নিজের আকর্ষণে কেবল নিজেরই ভেতর গুটিয়ে যাবার ভান করে, তার কাছে আরও কিছু অনর্থক

অনুভয়

আমাকেও লুকিয়ে রাখ, সময়ের ক্ষুব্ধ পরম্পরায়, তারই ঘূর্ণন পথে কেন্দ্রগামী ত্বরণের টানে যেই ব্যাসার্দ্ধ ধরে রাখে বৃত্তের প্রকৃত চারণভূমি- তারই মাঝে আরও কিছু অনর্থক নৃত্য দেখি, দেখি চক্রাকারে ফিরে আসে রাত্রি ও দিন, অথবা ঘড়ীর ডায়ালে কেউ রেখে দেয় বিভাজন! তবু তারওতো আবর্ত্তন আছে, আছে