কবিতা (Page ১১)

স্বরূপ সুপান্থের কবিতা

পরমোত্তীর্ণ ঢেউ শরীর থেকে ঘষেমেজে তুলে ফেলি সকল ঢেউ আমার সম্পূর্ণ শরীর-সমুদ্র, দীর্ঘকাল ভেজা আরক্ত গাঙ্গেয়, এইখানে উত্থান-পতন, রক্তজীব জ্বলন্ত আমার কোষ, বংশগতির লতিকা ধরে আমার সমুদ্রে লেখা আমার জীবন, ভেসে আছে জলের ওপরে বিচিত্র গাঙেয় রক্ত, অববাহিকায় আমার মেধার কুহক পুরুষ, শরীরের কুহক প্রকৃতি

শেখ মাহমুদা সুলতানা রোমা’র কবিতা

ভাঙ্গন আপনার রক্ত কণা ভেঙ্গে ভেঙ্গে যায়, আহ্… ভাঙ্গন কি আজকের? সৎ ভেঙ্গে ভেঙ্গে সতীদাহ, গুণে গুণে একান্ন পীঠ, চিৎ ভেঙ্গে ভেঙ্গে বিকার, ভাঙ্গতে ভাঙ্গতে আনন্দ পায় নাই ভয়ের আকার? সাংখ্য ভেঙ্গে ভেঙ্গে স্মৃতি। বৃক্ষ ভেঙ্গে ভেঙ্গে হিজল কাঠের চিতা, সমুদ্র ভেঙ্গে ভেঙ্গে সেই সে

মাহবুবুল ইসলামের কবিতা

এই পৌষের শীতেই সিদ্ধান্ত নিলাম পীরের কাছে মুরিদ হবো। তাই সবুজ ঘাসের কাছে প্রথম তালিম নিলাম, সে বলে ‘আমাদের জীবন হলো শিশির-হরফে লেখা একটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র। বৃথাই করছ বড়াই, মনু’ আমি দ্বিতীয় মুরিদান নিলাম পিতার লাঙ্গলের কাছে। আমরা যখন ইস্কুলে দৌঁড়ি বিদ্বান হবার লোভে, আমার

ত্রিবেণীর ঘাট ও অন্যান্য কবিতা

জিজ্ঞাসা নাযারেথের পাশ দিয়ে, ধুলোমাখা মুখে ঘরে ফেরে আহত প্যালেস্টাইন। সন্ধ্যার পর্দা-ঘেঁষে সেই কি ডাকে —ইম্মানূয়েল!! দ্যাখো নাযারেথের ধুলো আজও আগের মতো আছে। প্রতিটি সিনাগগ, মসজিদ আর চার্চ একই ইটে তৈরি তবু চারিদিকে এত রক্ত কেন? একটা হাহাকার-খচিত প্রশ্ন গালিল প্রদেশ থেকে উড়ে উড়ে বোধিবৃক্ষ

আলাপপর্ব ও অন্যান্য কবিতা

আলাপপর্ব সা : মেঘের পাত্রে দ্যাখো জীবন ভাসছে যুগপৎ.. তা : এর চে’ বৃষ্টি ভালো। সা : মানুষ ছুটছে মানুষের ভয়ে, পালাচ্ছে হরদম। তা : চলো বাড়ি ফিরি কিছু ছলাৎ ছলাৎ শব্দে… সা : আগুনের কোনও উষ্ণতা নাই না কি! তা : লাইচ্যুত বগির কিনারে

মা ও বাবা একটি সম্প্রদান কারকের নাম

ওই যে দেখছো সবুজ পাহাড়, নির্বাণ তত্ত্ব নিয়ে অহর্নিশ দাঁড়িয়ে আছে, তার ভিতরে আছে হাজার বছরের দহন পোড়নের লাভার ইতিহাস। অথচ তোমরা শুধু সবুজ দেখে মুগ্ধ হতে শিখেছো, অনুভব করতে শেখোনি। ইটের অরণ্যে বাস করে, এক্যুরিয়ামের জল দেখে যাদের অভ্যেস, তারা কি জানে ঘোলা জলের

মা এবং প্রজাপতি ও অন্যান্য কবিতা

মা এবং প্রজাপতি শোকেজে দু’টা গ্লাস ছিল পাশাপাশি, একটাতে ফুল একটাতে আঁকা ছিল প্রজাপতি, মা সখ করে মেলা থেকে কিনেছেন। বাবা বলিতেন— সুন্দর! তবে এক সেট না কিনে দু’টা কেন কিনিলে? মা বলিতেন, বুঝবে না তুমি। সেদিন গ্লাস দু’টা ভেঙ্গে টুকরা টুকরা করেছি, দু’দিন উপোষ

মজিব মহমমদ এর কবিতা

ক. গোলের খেলা ফুটবল ফুটবলও গোল শুটিংয়ের গয়নাবোঝাই বউয়ের মতো সাজানো বাপ-দাদার এ শহরে কৃষকের ক্ষেতে পঁচতে থাকা সবজির চেয়েও কমদামে মানুষের কাটা তাজা মাথা পাওয়া যায় মাথাও গোল। বারুদে ঠাসা ককটেল গোল গোল সলটেড বিস্কুটের মতো মোড়ানো ও প্যাচানো সূর্যের বোটা খুলে কে যে

দ্বীপ দিদারের কবিতা

প্রাচীরের ঘাস ও শ্যামল সমাচার এসব জীর্ণ প্রাচীরে ঘাসের বর্ণমালায় মুদ্রিত হচ্ছে শ্যামল সমাচার* এ শহর একদিন ছাই হবে মানুষেরই নিঃশ্বাসে** সভ্যতার পোড়া রসায়নে* জীবনের জৈবসারে* অঙ্কুরিত হবে পুনরায় সবুজের আচ্ছাদন** কিছু ঘাস অপেক্ষায় আছে* একদিন যারা মাটি ভালোবেসে মাটিচাপা দিয়েছিলো মানুষি পরিচয় পত্রখানা** আবার

নাচো হে ঘুঙুর জড়ানো সন্ধ্যা

নাচো হে ঘুঙুর জড়ানো সন্ধ্যা-নাচো সারসের চঞ্চুতে-সময়ের বিষাক্ত নিঃশ্বাসে মলিন হয়েছে চিঠি-কৃষ্ণআখর, যতোগুলো ধ্বনি আছে ধাতুর ঝংকারে, আছে ততোগুলো সুর, তবু কেনো থেমে আছে গান? ভেঙেছে সেতার? একেকটা তারা যেনো সরে যায় একেকটা চুম্বন থেকে দূরে, একেকটা যুদ্ধের ইতিহাস পড়ে থাকে ঘোড়াদের মৃত চোখে ফুলের

নস্টালজিয়া

ধ্রুপদ মুদ্রায় ঘুরে আসে নস্টালজিয়া হাত ধরলেই সিঁড়ি বেয়ে চিলেকোঠা গনগনে ভর দুপুর, ছায়া শিকার চুরি চুরি লুকোচুরি, মানিপ্ল্যান্ট লতায় তুমিও এক একদিন, ক্লান্তিহীন ঊর্ধ্বমুখ ব্যগ্র বাইসাইকেল, সময়ের ডাকনাম ছিল ‘অফুরান’ আকাশে স্থির একটা ভুবন চিল শ্যাওলা জমেছে ঐ কোণাটায় ঐখানটায় ছায়া দিনমান, শীতল একটা

দুইটা কবিতা

সহস্র উলুর স্বর হ্রেষা বেগে রক্তরাও ছুটছে টগবগে অবলীলায় পেরুচ্ছে খানাখন্দ, ঢাল দুর্মার আবেগে ভুলছো ভয় দৃষ্টিতেও থাকে সুরা, মদ্যময়-মাতাল। গেরিলার ডাকে প্রকম্পিত বন মেঘের কল্লোলে তারারা কাঁপে উত্তুঙ্গ শিরে চলছে শৌর্য্যের আয়োজন, বুকের খাপে নিশান্তের শিস কুহকের সুর বহ্নিতাপে ছেঁকে নিচ্ছ তীরের ফলা ভাবছ–