কবিতা (Page ১০)

দেহ আমার! সোনা আমার! পরাণপাখী!

১. নিরন্তর এক ব্যাধিচক্রে আটকে আছি। মহাব্যাধি এই বেঁচে থাকা কাল। জন্মমাত্র অধিকারে পেয়েছি যারে, বিনাশ অবধি তার থেকে নেই কোন পরিত্রাণ। মহাকাল চুমুকে চুমুকে পান করে ব্যাকুল পরাণ। ২. অনেক হয়েছে ভাগ— এই প্রাত্যহিক সোনারোদ, পাতালপুরী ছেঁচা কনককুসুম, জমিনের বুক চিরে জড় করা বিপুলা

ঘর

সবই আছে, বিশাল একটি উঠোন যেন রাদারফোর্ডের কোয়ান্টাম জগৎ। লোহার জানালার ওপার একজোড়া নিওলিথিক চোখ— ভীষণ বিষণ্ণ, পাঞ্জাবীর পকেটে ঝুলে আছে একটা মানচিত্র— ভীষণ ক্ষুধার্ত্ত, বাতাসে নুইয়ে পড়া জিকিরে মশগুল সুপারী বৃক্ষের একান্নবর্ত্তী পরিবার। আকাশ ছুঁই ছুঁই মিডিয়ামুখী অট্রালিকা বাড়ী ভীষণ ঔদ্ধত্য এবং গুচ্ছ গুচ্ছ প্রোলেতেরিয়ান

জীবনের যমজ পাখী, পুতুল ভাঙ্গার দিনে ও অন্যান্য কবিতা

সাঁকো ও পারাপারের ফজিলত সাঁকোটা পার হলেই পেরিয়ে যাব চিহ্নায়কের দূরত্বটুকু* ভূবনগাঁয়ে* অপার শূণ্যতায় একে অপরকে পাব* একে অপরের হব** সাঁকোটা ছুঁয়ে আছে উৎসের মেঠোপথ* গন্তব্যের সম্ভাবনা রেখা** কতটা বিন্দু* কতটা রেখা* ভেদে নয়* অভেদেই মিলিবে পরম ঠিকানা* চল পারাপারে জেনে নিই* বুমেরাং ব্যাকরণখানা**  

মাহবুবুল ইসলামের তিনটি কবিতা

শব্দের ভেতর কোন্ ভাষা খুঁজছ তুমি! শব্দে শুয়ে আছে তার শবদেহ, যে বর্ণের ভেতর তোমাকে টানছি সেখানেই তুমি সবচেয়ে বেশি বিবর্ণ। এরচেয়ে বৃক্ষের পাতায় পাতায় আছে শোন, সবুজ ক্লোরোফিলের ভাষা। সমুদ্রের বুকে জাগে যে ঢেউ, উত্তাল করে মানুষের মন এমন একটা ভাষা আমাকে দিতে পার?

ছয়টা কবিতা

জীবনানন্দ ও সচ্চিদানন্দ সংকেত জনপদ মুখরিত যুদ্ধের সম্ভাবনায়* চতুর্পাশ্ব ঘিরে আছে গোলাবারুদের দঙ্গল* ক্ষেপাণাস্ত্রের মতো মানুষ তাক হয়ে আছে মানুষের দিকে* চোখে বুকে পুষছে ভয়ানক বাঙ্কার* উদ্বেগ উৎকণ্ঠায়* তবু জীবনের জীবনানন্দ এক ঘাসফুলে* পাখির পালকে ঢেকে দেয় কৃষ্ণগহ্বর* ভালবাসার নামে বিলি করে সংঘাত বিরোধী সবুজ

ডাউন দ্য মেমোরি লেইন

রোদ্দুর রঙ পর্দ্দা উড়ছে ওয়াল্টজ মুদ্রায় প্যালো স্যান্টো ধোঁয়ায় সুগন্ধি আবছায়া ইমন কল্যাণ সন্ধ্যে ভিড়ছে রাগেশ্রী নোঙরে আহ্ আনন্দম্! এস প্রেম, এস অপার! মসৃণ অভিমান কুয়াশারা তবু চুপিসারে গাঢ়তর যদিও বিকেলের প্যালেটে ছিল নিখাদ অনুরাগ ফেনায়িত লাটে কাপে সতৃষ্ণ চুমুক তুমি বরাবরের লার্জ, ব্ল্যাক, নো

স্বরূপ সুপান্থের কবিতা

পরমোত্তীর্ণ ঢেউ শরীর থেকে ঘষেমেজে তুলে ফেলি সকল ঢেউ আমার সম্পূর্ণ শরীর-সমুদ্র, দীর্ঘকাল ভেজা আরক্ত গাঙ্গেয়, এইখানে উত্থান-পতন, রক্তজীব জ্বলন্ত আমার কোষ, বংশগতির লতিকা ধরে আমার সমুদ্রে লেখা আমার জীবন, ভেসে আছে জলের ওপরে বিচিত্র গাঙেয় রক্ত, অববাহিকায় আমার মেধার কুহক পুরুষ, শরীরের কুহক প্রকৃতি

শেখ মাহমুদা সুলতানা রোমা’র কবিতা

ভাঙ্গন আপনার রক্ত কণা ভেঙ্গে ভেঙ্গে যায়, আহ্… ভাঙ্গন কি আজকের? সৎ ভেঙ্গে ভেঙ্গে সতীদাহ, গুণে গুণে একান্ন পীঠ, চিৎ ভেঙ্গে ভেঙ্গে বিকার, ভাঙ্গতে ভাঙ্গতে আনন্দ পায় নাই ভয়ের আকার? সাংখ্য ভেঙ্গে ভেঙ্গে স্মৃতি। বৃক্ষ ভেঙ্গে ভেঙ্গে হিজল কাঠের চিতা, সমুদ্র ভেঙ্গে ভেঙ্গে সেই সে

মাহবুবুল ইসলামের কবিতা

এই পৌষের শীতেই সিদ্ধান্ত নিলাম পীরের কাছে মুরিদ হবো। তাই সবুজ ঘাসের কাছে প্রথম তালিম নিলাম, সে বলে ‘আমাদের জীবন হলো শিশির-হরফে লেখা একটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র। বৃথাই করছ বড়াই, মনু’ আমি দ্বিতীয় মুরিদান নিলাম পিতার লাঙ্গলের কাছে। আমরা যখন ইস্কুলে দৌঁড়ি বিদ্বান হবার লোভে, আমার

ত্রিবেণীর ঘাট ও অন্যান্য কবিতা

জিজ্ঞাসা নাযারেথের পাশ দিয়ে, ধুলোমাখা মুখে ঘরে ফেরে আহত প্যালেস্টাইন। সন্ধ্যার পর্দা-ঘেঁষে সেই কি ডাকে —ইম্মানূয়েল!! দ্যাখো নাযারেথের ধুলো আজও আগের মতো আছে। প্রতিটি সিনাগগ, মসজিদ আর চার্চ একই ইটে তৈরি তবু চারিদিকে এত রক্ত কেন? একটা হাহাকার-খচিত প্রশ্ন গালিল প্রদেশ থেকে উড়ে উড়ে বোধিবৃক্ষ

মা ও বাবা একটি সম্প্রদান কারকের নাম

ওই যে দেখছো সবুজ পাহাড়, নির্বাণ তত্ত্ব নিয়ে অহর্নিশ দাঁড়িয়ে আছে, তার ভিতরে আছে হাজার বছরের দহন পোড়নের লাভার ইতিহাস। অথচ তোমরা শুধু সবুজ দেখে মুগ্ধ হতে শিখেছো, অনুভব করতে শেখোনি। ইটের অরণ্যে বাস করে, এক্যুরিয়ামের জল দেখে যাদের অভ্যেস, তারা কি জানে ঘোলা জলের

মা এবং প্রজাপতি ও অন্যান্য কবিতা

মা এবং প্রজাপতি শোকেজে দু’টা গ্লাস ছিল পাশাপাশি, একটাতে ফুল একটাতে আঁকা ছিল প্রজাপতি, মা সখ করে মেলা থেকে কিনেছেন। বাবা বলিতেন— সুন্দর! তবে এক সেট না কিনে দু’টা কেন কিনিলে? মা বলিতেন, বুঝবে না তুমি। সেদিন গ্লাস দু’টা ভেঙ্গে টুকরা টুকরা করেছি, দু’দিন উপোষ