কবিতা (Page ৫)

নাবিক

এইসব অন্বিষ্ট ভুলে, আমার দিকে ফেরো হে দিগভ্রান্ত নাবিক, তোমার জাহাজ কতো সমুদ্রে, কতো ফেনায়িত তরঙ্গ ভেঙে হরেক মশলার ঘ্রাণে আধেক বোঝাই- কখনোবা স্বপ্নের মতো সেই দেশ, কখনো দূরে দিগন্ত ঠেলে দিয়ে, ভেসে ভেসে কতদূর, নামহীন কত বন্দরে বন্দরে ফেলেছে নোঙর, মানুষের ভীড়ে তুমিও নিজেকে

প্রস্থান

সামান্য মুখরতা তবে আমাকেও করে নেয় বশ, এই ভ্রান্তি, এই রাতের আবেশ- কতোদূর উড়ে যাবে তবে শঙ্খচিলের ডানা? আমরাও নেমে যাই বণিক জাহাজে, পাল তোলো, বাতাস হাঁকিয়ে নেবে মাস্তুল ভরা মেঘে। বালিশের কোমলতা আজ বড়ো বেশি বেমানান মনে হয়, একগ্লাস জলের তারল্য আর কতোবার পান

অধিচিন্তাপ্রবাহ

যেই মুখ দেখে মনে আসে সুনিপুণ সেই চারুপরিহাস, শিল্পীর উন্নাসী চোখ খুঁজে ফেরে যেইভাবে নিরেট পাথরে শিল্পের অনাম্নী প্রতিমা, কতোটা সখ্যতা আছে সেইসব স্মৃতি বা স্বপ্নের বল্কলে? পাখি ও পতঙ্গের কথা বলি, বলি ফুলের সুবাস- দৃষ্টির সীমানায় কতোদূর গেলে তাকে দিগন্ত বলা যায়? আকাশ কতোটা

তোমার জন্য

তোমার চুলের জন্য বুনোফুল তৃণপ্রমা আর হয়ত একটা মৌমাছি চলে গেছে পাগলের মত কেবল একটা মৌমাছি হৈতে আমাদের কেউ কেউ প্রচুর মধু খুঁজে পেতে মাটীর হাঁড়ী হাতড়াচ্ছিল সাইকেডেলিক ধাঁধায় আমরা সুড়ঙ্গ খুঁড়তে খুঁড়তে চলে এসেছি ৯০-এ তারার মেলায় ক্লান্তিকর সড়কে যেখানে কেউ আমাদের বিশ্বাস করে

একজন কবি

  একজন কবি নিশ্চিন্ত মনে ধীরপায়ে এগুলেন ২৬১ এভিনিউ ধরে মাথায় টুপী পরনে নিখুঁত পরিপাটি লিভাইস কবিই সর্ব্বৈব যিনি চেয়েছেন শুধুই কবি হৈতে আর বই বিক্রেতা হৈতে আর প্রকাশক হৈতে অন্য কবির শিল্পীর অনুবাদকের সেই একজন কবি যে লিখছে ১০০১ টা ভয়াবহ শব্দ ফিদেল কাস্ত্রোর

সুবর্ণ বাংলাদেশ

পূজা কড়া নাড়ছে দুয়ারে পূজারী এসেছে জানাতে আমাকে আমন্ত্রণ— আমি তো বাঙাল, বাঙালী মুসলমান দোয়া খায়েরের শেষে খুলেছি দরজা সামনেই পূজা, স্বাগতম। যাব, নিশ্চয়ই পাতে পাব বুটের ডালের তরকারী কচিপাঠার মাংস, লুচী, নারকেল নাড়ু— এই নাও, কচকচে সবুজ পেয়ারা সামনের ঈদে তোমারও নিমন্ত্রণ ভুরিভোজ হবে

বনাম কিম্বা বিলাপ

সপক্ষ, সুনাম, সুখ‍্যাতি — বনাম, বদনাম, কুখ‍্যাতি সুখী, শান্ত, পরিপূর্ণ — অসুখী, অশান্ত, অপূর্ণ সামাজিক, সাংসারিক,পারিবারিক — অসামাজিক, চোরচোট্টা, আউলাঝাউলা আধুনিক … — অনাধুনিক, অ-রোমান্টিক, অ-ক্লাসিক বিশ্বাসী, ধার্মিক, নৈতিক — সংশয়ী,বদমাশ,নীতিবিরুদ্ধ শিক্ষিত, সুদর্শন, গোছালো — মূর্খ, বিদঘুটে, অবিন‍্যস্ত শিকড় সন্ধানী, ঐতিহ্যবাহী — নির্জল, উন্মূল, নড়বড়ে

আটঘাট

না ৰাঁধিলে আট ঘাট, ৰাজে না তৰলা … ঠিকঠাক ওঠে না গো সুর … আজি এই প্রভাতী রাগে মনে ৰাজে গো ব্যঞ্জনা … তাই ৰাঁধিৰ তোমাকে, আট ঘাটে, তৰলায়, সুরেলা রাঁধায়— জানে রাধা! খেয়ে নানান ঘাটের জল; চল ৰেঁধে আটঘাট নেমে পড়ি মাঠে … পাঠে,

প্রতিকূল ঠাকুরের শিষ্য

বহে স্রোত অনুকূলে… তোলে পাল উজান গাঙ্গের নাইয়া … ভাসে নাউ ভাসে তীর্থযাত্রী … কালের যাত্রায় সর্গে উপসর্গে হৈব না তীরে থ তীর্থে … আমি প্রতিকূল ঠাকুরের শিষ্য নেই প্রয়োজন স্বর্গ … বহে জল তির্ তির্ > জ্ঞানধারা খুঁজি বিপরীত তীর … বিপরীত উদ্ভাস …

বা ড়া

… ‘ব’ যোগ ‘ড়’ সমান বড়! এইখানে ‘ব’ সমান বাহী কিংবা বাহক এবং ‘ড়’ সমান ডয়নের রহস্যরূপ। সুতরাং ‘বড়’ সমান বাহক কিংবা বাহীর ডয়নের রহস্যরূপ। ‘ব্’ যোগ ‘আ’ সমান ‘বা’। ওপরে জেনেছি, ব-এর মান … এক্ষণ জানব, ব্-এর মান ‘বহন’ এবং আ-এর মান ‘আধার’ অর্থাৎ

গজদন্ত

প্রিয় গজদন্ত, আজও তোমাকে ভালবাসি— প্রিয় তোমাকে ভজনা করি… দাঁতের ওপরে দাঁতের দাম্পত্যে— না বি/বাদে, না কলহে, বলি না কাউকে, একটা থাপ্পড়ে সব দাঁত ফেলে দেব! বরং দাঁতাল কাহিনীর জনপদে হাসির ঝর্ণাধারায় সবুজের বুকে জলের উচ্ছ্বাস দিয়ে বয়ে যাওয়া নদীর গজদন্ত শাখা ভালবাসি… প্রিয় গজদন্ত,

এ কা ন্ন ব র্ত্তী

… না, খাইয়া আসি নাই— তোয়ালে দিন, হাতমুখ ধুইয়া আসি, (পরমান্ন) গরম ভাতের ঘ্রাণে মোচড় মারিতেছে ক্ষুধার পাঁচালী! কমরেড্, আপনার কি মনে আছে? (পাঠশালায় পড়া) ‘একান্ন’ শব্দের সন্ধির ৰিচ্ছেদ— একান্ন = √এক্ + অন্ন! আমাদের হাটের হাঁড়িটি ভাঙ্গাভাঙ্গির ৰিপরীতে এক হৈতে পারিত— আমরা ত একান্নৰর্ত্তী