কবিতা (Page ৮)

স্মার্টকার্ড

পাখিদের কোথাও উড়ে যেতে স্মার্টকার্ড লাগে না, গোলাপেরা মাখে না আলাদা সুগন্ধি বা আতর, একমাত্র মানুষেরই সব লাগে- যেকোন ভূখন্ড বা হৃদয়ের অলি গলিতে পৌঁছতেও এখন দরকার পাসপোর্ট, ভিসা কিংবা স্মার্টকার্ডের, কেননা কেনা বেচার এ যুগে, মাংসাশী প্রাণিদের বাজারে, হৃদয়ও আজকাল নিলামে বিক্রি হয়, এখন

বুদ্ধ

বুদ্ধ, তুমি কি পাথরের ওপর আসন গেড়ে বসেছিলে? গাছগুলো মেঘ ছুঁয়েছে বিস্তীর্ণ তৃণভূমী থেকে হরিণেরা খুঁটে নিচ্ছে ঘাস সূর্য্যালোকের অস্পষ্টরেখা ছুঁতে কিভাবে তুমি একটা হাত না বাড়িয়ে থাকতে পার? বুদ্ধ তোমার মাথার ভেতর যে দেবতা নড়েচড়ে ওঠেন, মহান যোদ্ধা যুদ্ধের আগে ধনুর্বাণ বাঁকা করতে চায়

শিশুকাল

বড়োদের শিশুপাঠ থেকে শিখেছিলাম অ-তে অজগর… আর ভূগোল পড়েই জেনেছি, পৃথিবীতে নিঃসঙ্গতার চে’ বড়ো কোন সাম্রাজ্য নেই, বর্বরতার চে’ বড়ো কোন শাসক নেই। তাই এখন শিশুদের কাছে শেখার পালা। দেখা যাক তারা কী পছন্দ করে? দেয়াল? নাকি দিগন্ত? ইটের শিখর? নাকি ঘাসের শেকড়? একবার তাদের

দ অথবা বর্ণহীন ও অন্যান্য কবিতা

দ অথবা বর্ণহীন কালো—— আলো বসিয়ে আন্ধাগুন্ধা ব্লেড ঘুরাচ্ছে আলো ঘুরাচ্ছে—— গোপন খুন। ফোঁটা ফোঁটা ফিনকি ফিনকি ঝরছে সাদা- রুধির। আলো—— শব্দহীন চিৎকার গোঁ গোঁ গোঙ্গানো পার্শ্ববর্ত্তী শীৎকার রস রক্ত গড়িয়ে আসছে; বেগে আসছে কামজাত চিৎকার— শীৎকার— শীৎকার— চিৎকার— এ লীলা হেরিলে কালো আলো হয়ে যায়;

তোমার জন্যে

আজ সবাইকে ছুটি দিলাম যাও বিশ্বাস না হয় দেখ, পথে তাকিয়ে? একটা মাত্র গাড়ী, হোম ডেলিভারী বাকি সবাই ব্ল্যাংকেটের তলায় বাড়ী বাড়ী বাজাতে পার ডোরবেল, দরজা খুললে আমায় দেখিয়ে দিও। সত্যি বলছি, সবাইকেই ছুটি দিয়েছি আজ পথগুলো সব কেবল আমাদের বল, কোনদিকে যাবে, পূব পশ্চিম?

তমসাপ্রবঞ্চনা কাব্য থেকে নির্ব্বাচিত কবিতা

জ্যোৎস্না দর্শন এলাচের সুঘ্রাণ নিয়ে মাঠে-ইঁদুরের দেহের মতন আর্দ্র মাটীতে হেলে পড়ে চাঁদ, শীর্ণ পাতার ফাঁকে ফাঁকে ভেসে যায় পরিযায়ী মেঘ, বাতাসের সেকি আর্ত্ত-করুণ সুরে সুরে আমাদের অস্থী ও ত্বকে আঙুল বুলিয়ে যায় স্মৃতি, কাকে আর ডাকব বল? বহুদিন আগে মরে গেছে, শুকনা ঘাসের ওপর

প্রথম তুষার

আকাশ ভেঙ্গে রূপার গুঁড়ো, দিনভর শ্রবণাতীত তরঙ্গে অবিশ্রান্ত রূপা বৃষ্টি জমে উঠছে একটা রূপালী রূপকথা জানালায় তুষারবৃক্ষ, কী নামে ডাকি তোমায়? হিমাঙ্ককে পেরোয় অভিলাষী উল্টোরথ জলের ওপর অপরূপ ক্রিস্টাল ফুল! দূরে হ্রদের জলে সূর্য্যের প্রতিশ্রুতি, উষ্ণতার খোঁজে ডলফিনেরা জটলায় … দলছুট মীনশিশু সাঁতরায় সূর্য্য বরাবর

দূরভাষ

মৌতাত তোমার ফিকে হয়ে আসে ভোরের উজ্জ্বল রশ্মি চোখ ছুঁতেই সন্ধ্যে রাতের ঝুমঝুম মগ্নতার ভেতর ততোধিক মগ্ন স্মৃতিভ্রমণে কতটা মাখামাখি হয়েছিল ইচ্ছে পদক্ষেপগুলো, ভুলে গেছ বেমালুম! দূরভাষে দূরবর্ত্তিনী, বলে গেছ অতীত ছেঁকে এনে এক একটা উপকথা, নেশাঘোরে এক একটা কলি, চেনা সুর যেন হঠাৎ মনে

এরোমা থেরাপী

ঐ বরাবর দূরের হুইসেল, রঙীন পপলার অদেখা স্টেশন ছোঁয়া ঝাপসা রেললাইন সুখী মেঘেদের ক্লান্তিহীন নিঃসরণ… ডাক পাঠিয়েছিলে কাল, আজ ডুবসাঁতার এপাশে হাইরাইজের কাঁচে আকাশের আহাজারি কালকের চিরকুট আজ ঝড়ো হাওয়ায় ফেরার! সান্ত্বনা, পাইন অনুরাগমাখা পথ পুরাতনী, ফরাসী সৌরভ ছাপিয়ে প্রশ্বাস টুইটুম্বুর ফিরে আসি মন্থর পায়ে

দশ টাকা ও দৃষ্টিপাত

দশ টাকা মালিবাগে মালী নাই, ভাবলাম ঘরে ফিরে যাই— চালককে বললাম — বৌদ্ধ মন্দিরে যাবেন? — যাব — ভাড়া কত? — দিয়েন চল্লিশ — কম চাইলেন! চিনেন তো? — চিনি, সবার কাছে কি সমান চাওয়া যায়! ওইখানে মহামতি বুদ্ধের নিবাস চাতকের ভিড় খুঁজে ফিরে দর্শনের

তিনটা কবিতা

ক্ষত বিষয়ক সীমাবদ্ধতা ও সম্ভাবনা ভাবছি, ক্ষতটা সেলাই করে নেব; হাত দুখানি জুড়ে দেব আর দুখানি হাতে। ব্যাক্তিগত হতে হতে ক্রমান্বয়ে বিষিয়ে উঠছি নিজের কাছে— এপারের নুড়ীগুলো কান পেতে থাকে ওপারের বালিদের আলাপনে— হাত বাড়ালেই বুঝি লোপ পাবে দূরত্বটুকু— বেজে ওঠবে সমবেত কোলাহল— পলির কারুকাজে

গ্রহণ

ছয় ছয় শতাব্দী চলে যায় … ঘুম শহরে আজ দীর্ঘতম গ্রহণ! চাঁদের গায়ে পৃথিবীর ছায়া! গাড়ী পুল ওভার কর, মুগ্ধ মায়া! ‘হ্যালো, ব্যাকইয়ার্ডে যাও, এখুনি!’ ঘুমচোখ, পাইন ঝোপে শিরশির হাওয়া আকাশে গ্রহণের অর্দ্ধেক পূর্ণিমা … গ্রহণে ছায়াময়ী চাঁদ, সুবহেসাদেক! তুমি কি গ্রহণ আমার নাকি সূর্য