ঋক
ঠিক দুপুরের আগে টোকা দেয়, অস্থির
হঠাৎ মূল্যহীন হয়ে পড়ে সংহিতা স্বপ্নহার
দুপুরের শেষ নেই
সাঁকো-জোড়া এবং ভাঙ্গে গড়ে
জোছনা ফিরে আসে বারবার
লাউফুল উত্তাপে
কিভাবে হেসে ওঠে তীক্ষ্ণ লোভে
কিভাবে যেন ভেসে যায় নদীতে রাত
তৃণাঙ্কুর পায়ে হাঁটে ময়ূর, জলস্রোত সোজাসোজি
অথবা মিহি মিহি অন্ধকারকে ছুঁয়ে যায় সকাল-সমীপে
এইভাবে ঘ্রাণে উড়ে ফুলের আড়ালে পাখী
ততক্ষণে পূর্ণিমা ঘুম পায়, ঋক, সৌরভ ফুলে ওঠে
বাউশ বিল
বহু বছর বেঁচেছিল তুষি মাঝিয়াল
কুঁড়ের গভীরতার সাথে
মাছদের বন্ধুত্ব দেখে
আরশী চোখ বেয়ে গড়িয়ে পড়ে জল
ঢিবির চূড়ায় বাঁলিহাস চুরি হৈত য’ক্ষণ
খোয়ারে শাসিয়ে যেত
বয়স্ক সবুজ কুমীর।
বাউশ দিগন্তে ডানাভাঙ্গা পাখীর উড়ালে
তৎক্ষনাৎ অবচেতন হৈ, নতুন ব্যাথায়
সমস্ত ভিজে দোঁয়াশ মাটী অস্তিত্ব মোড়ে দেখি এ কি!
আমার পূর্ব্বপুরুষের মণিচিহ্ন।
সাম্পান
আলো হাওয়া ঠেলে সাম্পান যাচ্ছে
কর্ণফুলি বেয়ে প্রেমাশিয়া রৌদ্রছায়া ঘাটে
সময়বিহীন স্তব্ধ জল মনতলে
পুর্বের আত্নীয় বুলবুলের নৃত্যকলা বাজায়
কী যে আমার ভিতর বাউল ও মুর্শিদ
সুদীর্ঘ অন্ধকার
অরুন্তদ আলোয় পাহাড় মাপছি
নদী যতদূর গেছে ততদূর খুঁজি
তোমাদের কুটীরে পৌঁছাতে,
সূর্য্যিদীঘল ভোরেই সন্ধ্যা হয়।
বাউণ্ডুলে
একজন্মে এত নির্বাসন! হায়
হাওয়ায় পুড়ে গেল ভোরের ছায়া
অমিমাংসিত স্বপ্নের মত
স্বপ্নের উত্তাপে
কিভাবে জ্বলে ওঠে সুতীক্ষ্ম আগুন
কিভাবে যেন বয়ে যায় নদী
সারারাত যুদ্ধের পর সে যায়
পর্ব্বত ভাঙ্গতে ভাঙ্গতে নির্জন সমুদ্রতীরে
প্রহর কাটে প্রতীক্ষায় …
নিস্তব্ধ রাত, নিঝুম সন্ধ্যে
চোখের সরোবরে পাখা মেলুক বুনোহাঁস …
ওসমান গণি রচিত ও প্রকৃতিপুরুষ কর্ত্তৃক প্রকাশিত কবিতা, সাম্পান ও অন্যান্য কবিতা — প্রকৃতিপুরুষ বানান রীতিতে সম্পাদিত।