বাঙ্গালা ভাষায় জাক লাকাঁকে নিয়ে লেখালেখি খুব একটা চোখে পড়ে না। এই কথা আমরা জানি যে লাকাঁ পেশায় ছিলেন চিকিৎসক। সাইকিয়াট্রী ছিল তাহার কর্ম্মক্ষেত্র। অথচ খোদ সাইকিয়াট্রীতেই লাকাঁ পড়ানো হয় না। এদিকে এ-ও বলা বাহুল্য হবে না যে, সাইকিয়াট্রী বিশেষত সাইকো-অ্যানালিসিসকে ব্যাখ্যা করতে গিয়ে লাকাঁ সাহেব এদের সাথে দর্শন, সমাজবিদ্যা, ভাষাতত্ত্ব এমনকি গণিতের-ও সন্নিবেশ ঘটিয়ে এমন এক শাস্ত্র খাঁড়া করেছেন যে, কেবল মেডিকেলের-পড়াতেই-সীমাবদ্ধ-থাকা মেডিকেল ছাত্রদের বৌদ্ধিক অবস্থান লাকাঁকে বোঝার জন্য যথেষ্ট হয় না। অন্যদিকে দর্শনের ছাত্রদের বুদ্ধিবৃত্তিকচর্চ্চা লাকাঁ বুঝতে সহায়ক হলেও লাকাঁশাস্ত্রের যে একটা প্র্যাগমাটিক দিক রয়েছে, অর্থাৎ রোগীর সাথে ডিল করা— যাহার জ্ঞান আবার মেডিকেল ছাত্রদের থাকলেও দর্শনের ছাত্রদের নেই। ফলে সামগ্রিকভাবে লাকাঁকে বোধের আওতায় আনা যেন সবার জন্যেই সমস্যা।
১৯০১ সালের ১৩ এপ্রিল প্যারিসের এক ক্যাথলিক খ্রিষ্টান পরিবারে জাক লাকাঁ জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৩২ সালে তিনি ডাক্তারী পাশ করেন এবং তাঁর কর্ম্মজীবনের বেশীরভাগ অংশজুড়েই তিনি একজন মনোরোগবিশেষজ্ঞ এবং মনঃসমীক্ষক হিসেবে কাজ করে গেছেন। মূলত ১৯৩৬-এ ‘আয়নাপর্ব্ব’ সন্দর্ভটা পেশ করার পর থেকেই তিনি পরিচিতি পেতে শুরু করেন এবং ১৯৬৬ সালে তাঁর প্রবন্ধ ও ভাষণের সঙ্কলন এক্রি নামে প্রকাশিত হবার পর তাঁর খ্যাতি বিশ্বময় ছড়িয়ে পড়ে। জাক লাকাঁ-ই প্রথম ফ্রয়েডীয় মনঃসমীক্ষণবিদ্যার সাথে ভাষাতত্ত্বের সংশ্লেষ ঘটিয়ে মানব-অবচেতনের চারিত্র্য নির্ণয়ে সচেষ্ট হন।
Man speaks therefore, but it is because the symbol has made him man. (Lacan,1966)
জাক লাকাঁর মতে তিনটা অবিচ্ছেদ্য স্তরের সমন্বয়-ই হৈল মানব জীবনবাস্তবতা— প্রতীকী (Symbolic), কাল্পনিক (Imaginary) ও সত্য (Real)। এই প্রতীকী স্তরে আছে ভাষা। কিন্তু এই ভাষা কাহার? যেমন, আমি বলছি বাংলা আমার ভাষা। অথচ এই ভাষার রীতিনীতি, গঠন-গাঠন, গড়ন-পেটন ঠিক করবার সময় আমার সম্মতি নেওয়া হয় নাই। অর্থাৎ ইতোমধ্যেই তৈয়ার হওয়া একটা ভাষা-কাঠামোর মধ্যে আমি ‘পতিত’ হৈলাম। জন্মগ্রহণের অব্যাবহিত পর থেকেই এই ভাষা নেপথ্যে থেকে আমাদের মাথার ওপর ছড়ী ঘুরিয়ে আসছে রীতিনীতি, বিধিনিষেধ, প্রথা, সংস্কৃতি ইত্যাদি নানারকমের অনুষঙ্গের মাধ্যমে। ভাষা তথা প্রতীকী শৃঙ্খলার নেপথ্যে থেকে বিষয়ীর কোন অংশ না হয়েও বিষয়ীর যাবতীয় কলকাঠী নাড়ার এই ক্ষমতার দরুন লাকাঁ এই প্রতীকী শৃঙ্খলার নাম দিয়েছেন ‘the big Other’।
“…we are tools in the hands of the big Other that hides behind the screen and pulls the strings?”
স্লাভোয় জিজেকের এই উক্তি স্মরণে আনে পুতুল নাচের ইতিকথা উপন্যাসটার নাম। অবশ্য মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘বিগ আদার’ মূলত ফ্রয়েডের আনকনশাস বা নির্জ্ঞান। লাকাঁ ফ্রয়েডের চেয়েও আরো কয়েকধাপ এগিয়ে গেছেন এই পুতুল নাচিয়ের উৎস-অনুসন্ধানে। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন যে এই নির্জ্ঞান নয় বরং একে নিয়ন্ত্রণ-করা প্রতীকী শৃঙ্খলা-ই বিগ বস। কেননা, যেহেতু বিভিন্ন রীতিনীতি, আইনকানুনের আওতায় আমরা এসেছি ভাষার মাধ্যমেই, তাই এই ভাষাই নির্দ্ধারণ করে দেয় আমাদের অবদমনের বিষয়াদি যাহা ঠাই পায় আমাদের নির্জ্ঞানে। অর্থাৎ আমাদের নির্জ্ঞান কেমন হবে তা-ও নির্দ্ধারণ করে দিচ্ছে এই প্রতীকী শৃঙ্খলা। দেরিদার বিখ্যাত উক্তিটা আমরা মনে করতে পারি—
“There is nothing beyond the text”
এই টেক্সট বলতে দেরিদা কী বোঝাতে চাইছেন— একবার রেস্তোরাঁয় দেরিদাকে জিজ্ঞেস করা হৈল। তিনি বললেন আমার কাছে সবৈ টেক্সট। এবং এতটুকু বলে তিনি আশেপাশের আরো অন্যান্য কাষ্টমারদের বসে থাকার প্যাটার্ণের দিকে ইঙ্গিত করে বললেন— এটাও টেক্সট। তাহাতে কি বোঝা গেল কিছু? এখানে টেক্সটের জায়গায় যদি সিম্বোলিক অর্ডার শব্দটা ব্যাবহার করা হয়? অর্থাৎ, রেস্তোরাঁয় গিয়ে আমরা বানরের মত লাফাব না, বসে থাকব এই নিয়ম তো সেই ‘the big Other’-ই করে দিয়েছেন। ফলে এই আমি এবং আমার যাপিত জীবন আসলে এই ষ্ট্রাকচারের বাইরে কিছু না। এই আমি সেই বৃহৎ-অপরের নির্ম্মাণ।
“ ..This symbolic space acts like a yardstick against which I can measure myself. This is why the big Other can be personified or reified in a single agent: ‘God’ who watches over me from behind, and over all real individuals, or the Cause that involves me ( Freedom, Communism, Nation) and for which I am ready to give my life.” (Žižek , 2007 )
হাছন রাজায় কয় আমি কিছু নয় রে, আমি কিছু নয়।
অন্তরে বাহিরে দেখি, কেবল দয়াময়!
আমরা কি বুঝতে পারি কে এই দয়াময়! মনীষীদের চিন্তা-ভাবনায় প্রায়ই আশ্চর্য্য মিল পাওয়া যায় কেবল পার্থক্য হয় পরিভাষা বা টার্মিনোলজিতে।
আদিকাল থেকেই প্রতীকী শৃঙ্খলার সুবিন্যস্ত জাল ছড়িয়ে আছে আমাদের যাপিত জীবনে। আদিম টোটেম সমাজে ভাষারূপী এই প্রতীকী শৃঙ্খলা কিভাবে মানুষের মনস্তত্বকে নিয়ন্ত্রণ করত তার বেশকিছু উদাহরণ আমরা পাই সিগমুণ্ড ফ্রয়েড লিখিত টোটেম অ্যাণ্ড ট্যাবু গ্রন্থে। যেমন শাসকশ্রেণী সংক্রান্ত ট্যাবু অধ্যায়ে ফ্রেজার সাহেবের বরাত দিয়ে লেখক আমাদের জানাচ্ছেন যে, আদিম যুগে রাজা-রাজরা, সরদার এবং এতাদৃশ উঁচুবর্গের ব্যাক্তিদের ব্যাবহৃত জিনিস, তাদের উচ্ছিষ্ট খাবার এ সমস্ত কিছুই ছিল জনসাধারণের জন্য ট্যাবু। কেউ এই ট্যাবু অমান্য করলে তার পরিণাম ভয়াবহ হবে এমনই বিশ্বাস ছিল সেই সমাজে। নিউজিল্যাণ্ডের কোন এক সর্দার একবার তার উচ্ছিষ্ট খাবার রাস্তার পাশে ফেলে যায়। এক ক্ষুধার্ত্ত যুবক সেই পড়ে-থাকা খাবার খেতে শুরু করে। এমন সময় এক ব্যক্তি উৎকণ্ঠা নিয়ে তাকে জানাল যে এই খাবার সর্দারের ফেলে যাওয়া উচ্ছিষ্ট এবং এই খাবার স্পর্শ করে সে ভয়াবহ অন্যায় করেছে। ঐ কথা শোনামাত্রই যুবকটা মানসিকভাবে একেবারেই ভেঙ্গে পড়ে, তার সারা শরীরে খিঁচুনি শুরু হয় এবং পরদিন সে মারা যায়। আবার, একজন মাওরি স্ত্রীলোকের কাহিনীতে ঠিক একই রকম পরিণতি দেখা যায়।
A Maori woman ate a certain fruit and then learned that it came from a place on which there was a taboo. She cried out that the spirit of the chief whom she had thus offended would surely kill her. This incident occurred in the afternoon, and on the next day at twelve o’clock she was dead. (Freud, 1913)
আপাতদৃষ্টিতে এগুলাকে কালোযাদু বা অলৌকিক ব্যাপার বলে মনে হৈতে পারে। কিন্তু মূল ব্যাপার হৈল উপর্যুক্ত ট্যাবুগুলো ভাষারূপী এই প্রতীকী শৃঙ্খলার অংশ হয়ে মানুষের মনস্তত্ব এবং এর ফলে শারীরিক ক্রিয়াসমূহের নিয়ন্ত্রণেও ভূমিকা রাখছে। কিন্তু একজন মানুষ ঠিক কক্ষণ এবং কিভাবে এই প্রতীকী শৃঙ্খলার জগতে প্রবেশ করে? এ প্রসঙ্গে আসছি কিছু পরেই।
পৃথিবীতে আমরা যেমনটা দেখতে পাই অন্যান্য যে-কোন স্তন্যপায়ীর তুলনায় মানবশিশু অনেক দুর্ব্বল, অসহায়-অপরিণত অবস্থায় জন্ম নেয়। কেন এমনটা ঘটে তাহার যে-সমস্ত বিজ্ঞানভিত্তিক ব্যাখ্যা প্রচলিত আছে তন্মধ্যে বৈজ্ঞানিক মহলে বর্ত্তমানে যেটা সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে সেটা হৈল Obstetric Dilemma Hypothesis। (আগ্রহী পাঠকদের জন্য এই লেখার শেষে উক্ত প্রকল্পের ওপর কিছু নিবন্ধের সন্ধান আমি দেব।)
তো, এই অপরিণত অবস্থায় জন্ম নেবার খেসারত মানবজাতিকে দিতে হয়েছে এবং হচ্ছে। মাতৃজঠরের নিরাপৎ, নিশ্চিন্ত পরিবেশ ছেড়ে সহসাই পৃথিবীতে এসে পড়াটা শিশুর জন্য একটা বিরাট মানসিক ধাক্কা (Mental trauma)। ফলে সেই জরায়ুতে ফিরে যাবার ইচ্ছে তার চিরন্তন। এই ইচ্ছে অবদমিত হয়ে নির্জ্ঞানে স্থান পায়। এই অবদমিত ইচ্ছার প্রকাশ ঘটে স্বপ্নে, শিল্পে, বিভিন্ন প্রতীকে যেমন অন্ধকারাচ্ছন্ন গুহা, কুটীর ইত্যাদির ব্যাবহারে।
“এসো না এখনো এই গুহার ভিতরে খুঁজি/পড়ে আছে কিনা কোন স্মৃতিশূন্য আলো” (গুহাবাসী, জাগরণ হেমবর্ণ, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়)
জরায়ুতে ফিরে যাবার এই ইচ্ছেকেই লাকাঁ বলছেন মৃত্যুবাসনা। ফ্রয়েডের ডেথ ইন্সটিংক্ট বা মরণবৃত্তির সাথে লাকাঁ এখানে পার্থক্য রচনা করেন। লাকাঁর মতে মৃত্যুর ইচ্ছা এখানে প্রবৃত্তি নয়, আকাঙ্ক্ষার বস্তু। অর্থাৎ, অপরিণত অবস্থায় জন্মগ্রহণ করেছে বলেই মানুষেরা মৃত্যুপ্রবণ, অন্যথায় এই প্রবণতা অনুপস্থিত থেকে যেত।
“গভীর অন্ধকারের ঘুমের আস্বাদে আমার আত্মা লালিত;
আমাকে কেন জাগাতে চাও?
হে সময়গ্রন্থি, হে সূর্য, হে মাঘনিশীথের কোকিল, হে স্মৃতি, হে হিম হাওয়া,
আমাকে জাগাতে চাও কেন।
… দেখবো না নির্জন বিমিশ্র চাঁদ বৈতরণীর থেকে
অর্ধেক ছায়া গুটিয়ে নিয়েছে
কীর্তিনাশার দিকে।
ধানসিড়ি নদীর কিনারে আমি শুয়ে থাকবো— ধীরে— পউষের রাতে—
কোনোদিন জাগবো না জেনে—
কোনোদিন জাগবো না আমি— কোনোদিন আর।” ( অন্ধকার, বনলতা সেন, জীবনানন্দ দাশ)
মানুষের এই মৃত্যুবাসনার শুরুটা একেবারে জন্মলগ্ন থেকে। পরিণত অবস্থায় এই বাসনা আত্মপ্রেম ও আক্রম-প্রবৃত্তির সাথে যুক্ত হয়ে আরো শক্তিশালী হয়ে ওঠে। অপরিণত অবস্থায় জন্মগ্রহণের আরো একটা মূল্য মানুষকে দিতে হয় যার সূচনা ঘটে উইনিং কমপ্লেক্স বা মাই-ছাড়ানো গূঢ়ৈষার মধ্য দিয়ে। সাধারণত শিশুর যে বয়সে স্তন্যপান বন্ধ করানো হয় সে সময়ে শিশু তার জন্য প্রস্তুত থাকে না। ফলে মা তথা স্তন্যদাত্রীর একটা ‘ইম্যাগো’ তার ভিতর গড়ে ওঠে এবং এই স্তন্যপান বন্ধের ঘটনা তার অবচেতনে একটা ট্রমা হিসেবে থেকে যায় যার থেকে পরবর্ত্তীতে বিভিন্ন মানসিক এবং শারীরিক সমস্যার সৃষ্টি হৈতে পারে।
“In fact weaning, through any one of the contingent operations it involves, is often a psychic trauma, whose individual effects, such as anorexia nervosa, oral addictions and gastric neuroses, reveal their causes to psychoanalysis.”
(Lacan, 1938)
পুনরায় প্রতীকী শৃঙ্খলার প্রসঙ্গে ফিরে যাবার আগে লাকাঁ বর্ণিত Mirror Stage বা আয়নাপর্ব্ব সম্পর্কে কিছু কথা বলে নেওয়া যাক। জন্মের ছয়মাস পর থেকে আঠারো মাস বয়সের মধ্যে কোন শিশু যক্ষণ আয়নায় নিজের প্রতিবিম্ব দেখে তক্ষণি তার ভিতর ‘আমি’র ধারণা তৈয়ার হয়। এর আগ পর্য্যন্ত আমি বা অপর এরকম কোন ধারণা তার মধ্যে গড়ে ওঠেনি। আয়নাপর্ব্বের মাধ্যমেই সে বুঝতে পারে তাহাকে আয়নার সামনে যে ধরে আছে সেই ব্যক্তি এবং শিশুটা নিজে— এরা আলাদা দুইটা অস্তিত্ব। শিশুটার মধ্যে এই ‘আমি’র ধারণা থেকেই ইগো বা অহমের সৃষ্টি। কিন্তু এই আয়নায় দেখা প্রতিবিম্ব তার আসল রূপ নয় বরং তার আয়নাছবি বা মিরর ইমেজ ফলে এই ‘আমি’র ধারণা ভ্রান্তি বৈ কিছু নয়। শিশুটার আয়নায় নিজেকে দেখার সাথে প্রতিনিয়ত ক্ষুধা, উৎকণ্ঠা, ক্লান্তি এ সমস্ত অনুভূতির কারণে খণ্ড-খণ্ডভাবে নিজেকে উপলব্ধি করার বিষয়টা মেলে না। যার ফলে তৈরী হয় বিচ্ছিন্নতাবোধ। আয়নাপর্ব্বের এই বিচ্ছিন্ন মানবশিশু প্রবেশ করে প্রতীকী শৃঙ্খলার জগতে। নির্ম্মিত হয় সেই শৃঙ্খলার আদলে। ফলত মানুষের কোন স্বাধীন অস্তিত্ব থাকতে পারে না।
লাকাঁ দেখাচ্ছেন, এই যে পাশ্চাত্য দর্শনে কজিটো’র দোর্দ্দণ্ড প্রতাপ তার মূলে আছে মূলত অ্যাবসার্ড, নিরর্থক মানব-জীবনকে মৃত্যুভীতি থেকে সরিয়ে একটা মেকি অর্থ দেওয়া এবং দার্শনিক ভিত্তির উপর দাঁড় করিয়ে ব্যাপারটাকে যুক্তিশীলতার মর্য্যাদা দেওয়া। কে এই আমি? এতকাল মানুষ ধারণা করে এসেছে মানুষের একটা স্বাধীন অস্তিত্ব আছে। সিগমুণ্ড ফ্রয়েড দেখালেন, আসলে মানুষের স্বাধীন কোন অস্তিত্ব নেই, সে চলে তার অবচেতনের নিয়ন্ত্রণে। লাকাঁ এসে বললেন, এই অবচেতনও অন্যের নির্ম্মাণ। আর এ-জন্যই নেগেশনের যুক্তি ব্যাবহার করে কার্তেসীয় দর্শনের সাথে বিদ্রোহমূলক পার্থক্যকারী জাক লাকাঁর শ্লেষাত্মক বচন—
“ either I do not think or I am not”
ঋণঃ
১. বন্দ্যোপাধ্যায়, অমল। জাক লাকাঁ বা পিতৃনামের পরাক্রম। উত্তর-আধুনিক চিন্তা ও কয়েকজন ফরাসি ভাবুক। কলকাতা: এবং মুশায়েরা, ২০১১।
২. চট্টোপাধ্যায়, অর্ক। লাকাঁ চর্চার প্রস্তাবনা: ভাষা থেকে রিয়্যালের দিকে। অন্তর্জাল।
৩. Lacan, Jaques. Family Complexes in the Formation of the Individual, Translated by Cormac Gallagher, School of Psychotherapy St. Vincent’s Hospital, Dublin.
৪. Lacan, Jaques. Ecrits. Translated by Bruce Fink, New York and London: Norton, 2006.
৫. Lacan, Jaques. Seminar V. Translated by: Cormac Gallagher. Internet.
৬. Žižek, Slavoj. Empty gestures and performatives: Lacan confronts the cia plot, How to Read Lacan, New York and London: Norton, 2006.
৭. Martin Haeusler, M., 2021. The obstetrical dilemma hypothesis: there’s life in the old dog yet. [ebook] Cambridge: Biological Reviews. Available at: https://onlinelibrary.wiley.com/doi/10.1111/brv.12744
৮. Alberman, E. (1991). Are our babies becoming bigger? Journal of the Royal Society of Medicine 84, 257–260.
শিবলী শাহেদ রচিত ও প্রকৃতিপুরুষ কর্ত্তৃক প্রকাশিত প্রবন্ধ, জাক লাকাঁ এবং ‘নির্ম্মিত’ মানুষ — প্রকৃতিপুরুষ বানান রীতিতে সম্পাদিত।