নন্দনচেতনায় হলুদ বিপ্লব
রাষ্ট্রবিজ্ঞানের একজন অন্ধ প্রফেসর
সারাদিন লাইব্রেরী খুঁজে
শুধু আমাকে পেয়েছে
তাহার পাঠযোগ্য আর কোন টেক্সট নায়
আমি নাকি তাহার রাষ্ট্র চেতনা
আমি বেমালুম রাজনৈতিক জ্ঞান ভুলে গেছি
তাহাকে সরল ভাবে জানিয়ে দিলাম
রাষ্ট্রের প্রতিটি গিটে গিটে গিরগিটির বসবাস
গিনগিন এসব গিটে আমি নাই
বরং একটা মৌটুসী পাখী ও
হলুদ বিপ্লবের সম্ভাবনায়
আমি সৌন্দর্য্য বিজ্ঞানের ল্যাবরেটরীতে মগ্ন আছি
চিত্তাকর্ষক
পথ পায়ের ঋণে পথে পথে
হারিয়েছে অচিনপুর
উত্তাপে গলে গেছে মগজ
বোকা বোকা শব্দের ঘুঘুচরে বসে আছি
চোখ খুলে মার্বেল খেলব ভেবে
বসে আছি বৃষ্টির মিছিলে
নিহত গোলাপের পাপড়ি
সহরের পথে উত্তাপ ছড়াচ্ছে।
তোমাকে বোঝার পর আমি বুঝে গেছি
পৃথিবীতে হিংসা ও উত্তাপ পরস্পর সমান্তরাল
জনযুদ্ধে মগ্ন জনজীবন
গণ উত্থিত চেতনায়
তোমার অবহেলার নগরে ফুটবে না
আর কোন রক্ত গোলাপ।
প্রতিটি নিঃশ্বাস শহীদ হবে
নগরের পথে পথে
মৌটুসী পাখী ভাল থেক
আমি উড়ে যাব অচিনপুর …
সহরে রোদের উজ্জলতায় তোমার হাসি ঝরে
গাছের গুঁড়িতে ক্লান্ত নূপুর কাহার পাখীরা জানে
নিকোটিনের গন্ধে মাখা গ্রামসির কবিতাগ্রাম
অসীম শব্দ শূন্যতার ক্ষত জানে কি গাঙ্গচিল?
আকাশের ঠিকানায় পাখী উড়ছে
খোলা চুল
নূতন শতাব্দীর ধারে জেগেছে মন
সব কোলাহল থেমে গেলে
মৌটুসী পাখী ফিরবে গ্ৰামসির পাঠশালায়
ভাতের হাঁড়ীতে ভাসে রক্ত জল
ভাতের হাঁড়িতে ফুটতে ছিল সাদা ভাত
একসাথে মিলেমিশে ফুটন্ত ভাত ফুটতে ছিল জ্বলন্ত উনুনে
ফুটতে ফুটতে ভাতের সাথে ভাতের হয়েছে উত্তপ্ত আগুনে কথা
গড়াগড়ি খেতে খেতে তপ্ত পানিতে কেউ কাউকে দেয়নি ধাক্কা
নিজেকে টিকিয়ে বাঁচিয়ে চালের দানা থেকে
শুভ্রবুক প্রসারিত করে হয়েছে আমার নির্জলা ভাত
রাতের গভীরে তাহাজ্জুদের সালাতে
অজুর শুভ্রতায় মগ্ন কেউ
কুমকুম ইয়া হাবিবা কানতানামু
ক্ষিধার গতরের কোন কিলার
তোফাজ্জলের গতরের গোশতে দিয়েছে নযর
তোফাজ্জল নিপীড়িত রাষ্ট্র কাঠামোর
এক ফুকোমানব
তোমার দানব মন চিনবে না
সিভিলাইজেশন এন্ড ম্যাডনেসের খোলা জানালায়
উঁকি দিয়ে দেখ
মানব রতন তোমার মারতি পতন
তোমার উদ্দেশ্যহীন হঠকারী উত্তাপের উল্লাসে
ভেস্তে গেছে আশরাফুল মাখলুকাতের জীবন
তোমার ভুলের ইসতেহারের ফিরিস্তিতে
ভাতের হাঁড়ীতে পাণি না রক্তযমুনা বহে যায়
খুব নিরালায় নিজের ছায়ায় তুমি প্রকৃতির কাছে
পাখীর হাহাকারে দেখ তোমার অর্ব্বাচীন
সময়ের কান্না ভাসে
কারণ ছাড়াই কৌশল জানে মৌটুসী পাখী
কিংবা সময় সময়োচিত মানুষকে ভুল বুঝে
মন ফিরে
ফিরে না
ভিজে যায় মন রোদ্দুর দিনান্তে
ফাঁকা দেয়ালের ঠারে ঠারে বাজারে
বাজিগর সাপ আর বেজি নাচায়
ভ্যাবলা চাহনি সাঁজোয়া যান
সাইরেন বাজিয়ে এম্বুলেন্স যায়
হৃদপিন্ডে অক্সিজেন কমে যায়
ভালবাসা ক্রমে গড়ায় বিচ্ছেদের দিকে
সময়ের কোলাহলে ভালবাসা ভাল নাই
প্রাচ্য জীবনের হাতে পেরেকের ঠোকা
সময় সময়োচিত মানুষকে ভুল বুঝে
সক্রেটিস রাইট উইং কিংখাব
সময়ের প্রয়োজনে চুষে গিলেছেন বিষ
অনুপম সময় তাকে নির্দোষ ঘোষণা দিয়ে
ক্ষমা চেয়েছেন এথেন্স আদালত
ক্ষমতার সন্দেহ বাজারে দুর্ভিক্ষ
একটা দিয়াশলাই দ্বিতীয়বার জ্বলে না
সময়ের হের ফেরে তথ্যের দেয়াল ছেড়ে
নিদ্রাতুর প্রতি কথার বাঁক পেরিয়ে
যে পাখীটি উড়ে গেছে বিপন্ন মনে
সময়কে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে সময়ের উত্তাপে
সেকি মৌটুসী পাখী না গ্ৰামসির মেয়ে
তেতো মুখে কাল চা সময়ের ডায়াবেটিস
কারণ ছাড়াই কৌশল জানে মৌটুসী পাখী
পাখীরা কি নিরাপদ অরণ্যের গভীরতায়
লক্ষণ রেখায় দ্রোহ দাগ
দিকহারা পিপাসায় জড়সড় অজস্র চোখ
আগুনের উপকূল কি ছিল ভুল
পতনের উপগ্রহের, বিরক্ত কর না
সময় এখন আওতার বাইরে
সময় সংলাপে সময় উঠে আসে
মিলিত মানুষ বিপন্ন সময়ে-সময় নির্ম্মাণ করে
পালাতে পালাতে ক্লান্ত মানুষ তোমাকে ভরসা করবে
কোন আপত্তি ছাড়াই তোমার স্বপ্নের হাত ধরবে জনতা
সখা অসহ্য দাহ বুকে মৌটুসী পাখী উড়বে
গোঁড়ামিকে ঝেড়ে ফেল
চাপা জেদ সহজে ভুলতে পারে না মানুষ
পাথরের বুকে কুসুম থাকে না
আমাকে প্রেমের কথা বল না গ্ৰামসির মেয়ে
গোপন শব্দ বুকের দরযা ভাঙ্গবে
নিঃসঙ্গতা কিংবা শূন্যতা
আমার কিন্তু আমার নয়
এইসব আমার সাথে আসে, আমার সাথে যায়
তবু তোমাকেই স্বপ্নের জালে বুনি
বুনোয়েল হাঁসফাঁস করে হৃদয়ের আশপাশ
মিথ্যা থেকে বেরিয়ে আসে অজস্র মিথ্যা
ক্রমশাই ঝাপসা হয় ভোরের আলো
আলো ফুটতে না ফুটতেই দিন মেপে
সময় পায়ে বাদে পথের গতি
আমাকে ফেরাও নষ্ট সহর
সহরতলীর শয়তান আলবেয়ার কামু
সাদা পৃষ্ঠায় ঘোষিত সময় একা
বন্ধ্যা কলম-ও মুদ্রিত হবে সাদা যমীনে
ব্যর্থতা থেকে জন্ম নেয় সফলতার ফিরিস্তি
টোকা মারি বারবার চিৎকার করে
প্রকৃতজন কিংবা উজবুক
ভুঁইফোর সময়ে তিতিক্ষার পিচকিরি
কালো নয় লাল কালিতে
ভিজিয়ে দিবে ভালোবাসা যমীন
লাল বৃষ্টিতে ভিজে যাবে মুক্তাগর্ভ
সূর্য্য উঠবে পাখী ডাকবে
কুয়াশার আবরণ ভেদ করে শিশুরা জাগবে
এইসব মলিনতা মুছে যাবে শিশিরের স্নিগ্ধতায়
চিন্তিত মননে প্রিয় স্বদেশ
কাগজে কালো বর্ণের মিছিল
আকাশে কাঁপছে চাঁদ
জীবনের বুকে মৃত্যু কখন চিল মেরে দেয়
তোমার সাথে হল না আমার
হলে হবে পয়মন্তর কালে
এসব ভেবে আর কি লাভ
হারিয়েছি পলাশীর প্রান্তরে …
প্রেম রসে সুতোঁনটী বন্দরে ডুবেছে
আমার পূর্ব্ব পুরুষ
লক্ষীমন্তর মেয়েটি তোমার কোমলতায়
উদ্ভাসিত হোক রক্তপাতহীন ঘৃণার ব্যাকরণ
তুমি ফির ফেরাও
প্রিয় স্বদেশকে
তুমি বাঁচাও
ঘাসের চাদরে জড়ানো রক্ত সূর্য্যকে
হারিয়েছি যা নিজেদের ভুলে
মেনে মননে তুমি বাঁচাও সম্ভাবনার আগামী
আমি মেঘ শিশু; বৃষ্টি শেষে পাতার কান্না শুনি
শ্রাবণের মেঘগুলি বিদাশায় ঝরছে
তোমার ব্যাথায় এই বর্ষায় দোলনচাঁপা আসেনি সহরে
বৃষ্টির জলে মুছে যাক ছোপ ছোপ রক্তের দাগ
শূন্যতার সম্ভাবনায় তুমি
অথচ দেখ তোমার মনন মেধার
সেই আলোকিত বিকল্প নেই
প্রচলের বিপরীতে প্রকৃষ্ট সম্ভাবনায়
তুমি ফিরো পাঠে
আমি অপেক্ষায় আছি
দীর্ঘ দিন থাকব
তোমার মেধায় গ্ৰামসির অর্গ্যানিক বৌদ্ধিক অন্নেষণে
অনাগত সকাল
তুমি শিশিরে ভেজা লাবণ্য নিয়ে আস
প্রতিটি প্রচলকে ফেরাও অপ্রচল সম্ভাবনায় …
তামাসার ভেতর দিয়ে ফালতু কাজের দায় এড়ানো যায়
বঞ্চিত মননে তুমি পারমিতা কিংবা মৌটুসী পাখী অথবা গ্ৰামসির মেয়ে
আমার ভাটির প্রত্নলক্ষী হাসুহেনা তোমাকে ডাকছে
চিন্তিত মননে তুমি তাকে জানিয়ে দাও
তোমার মনন চেতনার বোধ
তার বিরল ঘ্রাণের সৌরভে
সম্ভাবনার ভবিষ্যত তুমি
তোমাকে নির্ম্মাণ কর
“আমরা কাছে আগুন ছিল না
আমি চাঁদের আগুনের শাদা সিগ্রেট জ্বালিয়ে বসেছিলাম কুয়াশায়।”
পৃথিবীর শেষ বারুদখানায় শেষ বুলেটটি তৈরী হবে
পার্টির ক্রিমিনাল নেতার জন্যে
তত্ত্বগতভাবে ভাবে সম্ভব কিংবা অসম্ভব এই ভাবনার দায় চিন্তকের, কবির না…
রুদ্র শায়ক রচিত ও প্রকৃতিপুরুষ কর্ত্তৃক প্রকাশিত কবিতা, রুদ্র শায়কের কবিতা — প্রমিত বানান রীতিতে সম্পাদিত।