কবিতা (Page ৯)

বাঁক

আঁ-কা-বাঁ-কা সবুজ মাঠের পথ ধরে হেঁটেছি কেবল, উজান ভাটির ব্যাকরণে শুনি নাই জলের কাকলি। (…) এটুকু বুঝিনি, কতটা আঘাত পেলে বাঁক নেয় নদীটার মন, অভিমানে সরে সরে যায় নদীয়ার কূলে, জলজ ভাষায় ভেসে ভেসে যায় কাঁখের কলসী, কূলের কথণে ভেসে ভেসে যায় ঘাটের কাহন, মরমিয়াগাথা

বিদ্রোহ

হাতটী মাথায় রেখে আশীর্বাদ কর অবলীলা, আমাকে আরেকবার ছুঁয়ে যাও— কবী নজরুলের বিদ্রোহী কবিতার সারবত্তার ভিতর দিয়ে আমাকে হাঁটিয়ে আন স্পার্টাকাসের শরীর থেকে হাড় এনে শল‍্যচিকিৎসায় গেঁথে দাও মেরুদণ্ডে। আপোষকামিতার নির্লিপ্ত ঘেরাটোপে বন্দী ঘোর অমানিশা সময়ের অন্ধকারে মশাল মিছিল সত‍্য— বর্শাবিদ্ধকালে প্রতিবাদ ছাড়া অন‍্য কোন

নিজের তিরাসের কাছে

নিজের তিরাসের কাছে আমি তো নগন্য মানুষ একটা বুঝি বা না বুঝি তা’রি ইবাদত করি সকাল বিকাল মনে মনে বানানো সুরতের আদলে নিরাকার পাথর ভাঙ্গি চাইরদিকে উড়াই কা’র ছায়ারে কে ফালায়া যাইতেছে পথে দূরে যাইতে যাইতে ফসলের বাঁসে ফিরে যারা তারারেও দেখি চায়ের দোকানে বসি

পড়ে থাকা পাতা

পড়ে থাকা পাতা দেখে গাছ হলুদ শরীর কিছু পতনের চিহ্ন দুঃখের নিরালা এক ফোঁটা দীর্ঘশ্বাস বাকী সবুজ পাতার আগাম শুন্যের গান পাতাদের ডাক বেদনার ঘুমের আউলিতে কিছু কুঁড়ি মু‘ছতেছে পতনের আহাজারি বিচ্ছেদী টান ছিঁড়াবিড়া পাতা পইড়া থা‘কতেছে উ‘ড়তেছে, পু‘ড়তেছে না-দেখা আগুনে গাছ ফিরে গাছের ভিতর।

ক্লাইভের চেয়ারের নীচের রাইত

ক্লাইভের চেয়ারের নীচে জমছিল যেই রাইত দু্ইশত চৌষট্টি বছর আগে তা’র কতক আন্ধাইর আইজো আমাদের ‘একাডেমিক’ চেয়ারের পাছায় কলাভবনের খাঁজে লাইব্রেরির সেলফে ঝুল্লু খায় সে’ এক দেশী বিলাইর কালা মুখ নিরাকার ইঁদুর বিলাই খেলে সে’ চতুর আমাদের আম জাম কাঁঠালের উঠ্‌তি চারাগুলোর লগে সোনারইদে ঝলঝলা

আমার নাম ফিলিস্তিন

আমার নাম ফিলিস্তিন, আল-আকসা মসজিদ আমার লজ্জাস্থানের মত পবিত্র তবুও ইসরায়েলের হাত কমলার কোয়া থেকে রক্তজবা ফুল তুলে আর আপেলের শরীরে ভুল করে আঁকা শব্দের মত কাটাকাটির দাগ বসিয়ে দেয় পরম নিষ্ঠুরতায় … আমি ফিলিস্তিন, আকাশের তারায় আগুন জ্বলে; রাত হয়ে ওঠে কেয়ামত— তক্ষণ খিদের

অনাথ ও পরাগ

অনাথ চাতকের জল পিপাসায় আমারি জন্মদাগ, অথচ হাত থেকে খসে পড়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞান, প্লেটোর ধারণা … অচিন পাখীর খাঁচাটা ভাঙ্গা হৈল না আর শিরদাঁড়ার প্রকারভেদে সেই জলাজমী নিরম্বু অস্তিত্বের কাছে পথ দু’ভাগে বিভক্ত— এক : সপুস্পক, দুই : অপুস্পক … দুঃসময় থেকে যে শিশু বেরিয়ে আসে

মাটিতে নামো, হে ঈশ্বর

পাথরের তলে ঘুমিয়ে থাকে যে জল আমি তার বুকে কান পেতে শুনি বয়ে চলা আদিম কথা। দেখি মরুঝড়ে শীর্ণ আদম গড়িয়ে এসেছে অন্নপূর্ণার দুয়ারে— ক্লিষ্ট দুখানি হাত জুড়ে গজিয়ে ওঠেছে কাঁটাগাছ, ক্ষতবিক্ষত হৃদয়ে বাঁধা সূর্পণখার লাল কাঁচুলী থেকে ভেসে আসে খাণ্ডব ঘ্রাণ, পাথরে কপাল ঠেকিয়ে

নবনীতা জলের বোধন

নবনীতা জলের বোধনে যে নিজেকে ভেজায় না, সে সংঘাতকে জাগাতে জানে না! … যে সংঘাতকে ভালবাসে না, সে সম্ভাবনাকে বলতে পারে না, ভা-ল-বা-সি! … ভুল ও ফুলের গলায় গলায় ভাব, পরাগায়ণটুকুর অনুধ্যানে হতে পারে না পথের সমাজদার! … এইটুকু ভেবে ভেবে হাঁটছিলাম, মৌমাছির ইন্ধনে! …

তিনটা ‘ট্যাঙ’ কবিতা ও ভূমিকা

ভূমিকা— ট্যাঙ ডাইনেস্টির (৬১৮—৯০৭ খ্রিস্টাব্দ) সময়কে বলা হয়ে থাকে চৈনিক কবিতার স্বর্ণযুগ। চৈনিক ইতিহাসের মহত্তম কবিতাসমূহ ট্যাঙ রাজবংশের এই তিন শতাব্দী সময় জুড়ে রচিত হয়েছে। এবং প্রায়শই বলা হয়ে থাকে তিন থেকে চারজন কবিশ্রেষ্ঠ এই যুগে বসবাস করতেন। ওয়াঙ হান, কুই হু, এবং লি বাই-এর

ছায়ার শোক ও পৃথিবী তার সন্তানদের কোথায় নেয়

পৃথিবী তার সন্তানদের কোথায় নেয় ধরণী মা হলে আকাশ তো তবে পিতাই আর আমরা পৃথিবীর সন্তান না হলে— আমরা তাহলে কারা, আমরা তবে কোথায়? যদি হয়— আমরা কি পৃথিবীর পেটের ভেতর অবস্থান করছি? আকাশ ও ধরণীর মাঝখানে, মায়ের পেটে থাকার মত! আমরা কি ভূমিষ্ঠ হওয়ার

একটুখানি পরিচয়

বাপু, এত সাদা কথা কও ক্যনে? একটু শ্যামল কথা কও, অব্যক্ত বর্ষায় জুড়াক পরাণ! … লোকমুখে শোন নাই? এইখানে রমনীরা নয়ন পিঞ্জরে পুষে শ্যামসুখপাখি! মওলার ইশকুলে পড়ো নাই? আমরা যে শ্যামলবরণ জাতি! … সাদা না, শ্যামল মনের মানস আমি! দেখি, সময়ে সময়ে রং বদলায় প্রকৃতি