কবিতা (Page ৯)

অনাথ ও পরাগ

অনাথ চাতকের জল পিপাসায় আমারি জন্মদাগ, অথচ হাত থেকে খসে পড়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞান, প্লেটোর ধারণা … অচিন পাখীর খাঁচাটা ভাঙ্গা হৈল না আর শিরদাঁড়ার প্রকারভেদে সেই জলাজমী নিরম্বু অস্তিত্বের কাছে পথ দু’ভাগে বিভক্ত— এক : সপুস্পক, দুই : অপুস্পক … দুঃসময় থেকে যে শিশু বেরিয়ে আসে

মাটিতে নামো, হে ঈশ্বর

পাথরের তলে ঘুমিয়ে থাকে যে জল আমি তার বুকে কান পেতে শুনি বয়ে চলা আদিম কথা। দেখি মরুঝড়ে শীর্ণ আদম গড়িয়ে এসেছে অন্নপূর্ণার দুয়ারে— ক্লিষ্ট দুখানি হাত জুড়ে গজিয়ে ওঠেছে কাঁটাগাছ, ক্ষতবিক্ষত হৃদয়ে বাঁধা সূর্পণখার লাল কাঁচুলী থেকে ভেসে আসে খাণ্ডব ঘ্রাণ, পাথরে কপাল ঠেকিয়ে

নবনীতা জলের বোধন

নবনীতা জলের বোধনে যে নিজেকে ভেজায় না, সে সংঘাতকে জাগাতে জানে না! … যে সংঘাতকে ভালবাসে না, সে সম্ভাবনাকে বলতে পারে না, ভা-ল-বা-সি! … ভুল ও ফুলের গলায় গলায় ভাব, পরাগায়ণটুকুর অনুধ্যানে হতে পারে না পথের সমাজদার! … এইটুকু ভেবে ভেবে হাঁটছিলাম, মৌমাছির ইন্ধনে! …

তিনটা ‘ট্যাঙ’ কবিতা ও ভূমিকা

ভূমিকা— ট্যাঙ ডাইনেস্টির (৬১৮—৯০৭ খ্রিস্টাব্দ) সময়কে বলা হয়ে থাকে চৈনিক কবিতার স্বর্ণযুগ। চৈনিক ইতিহাসের মহত্তম কবিতাসমূহ ট্যাঙ রাজবংশের এই তিন শতাব্দী সময় জুড়ে রচিত হয়েছে। এবং প্রায়শই বলা হয়ে থাকে তিন থেকে চারজন কবিশ্রেষ্ঠ এই যুগে বসবাস করতেন। ওয়াঙ হান, কুই হু, এবং লি বাই-এর

ছায়ার শোক ও পৃথিবী তার সন্তানদের কোথায় নেয়

পৃথিবী তার সন্তানদের কোথায় নেয় ধরণী মা হলে আকাশ তো তবে পিতাই আর আমরা পৃথিবীর সন্তান না হলে— আমরা তাহলে কারা, আমরা তবে কোথায়? যদি হয়— আমরা কি পৃথিবীর পেটের ভেতর অবস্থান করছি? আকাশ ও ধরণীর মাঝখানে, মায়ের পেটে থাকার মত! আমরা কি ভূমিষ্ঠ হওয়ার

একটুখানি পরিচয়

বাপু, এত সাদা কথা কও ক্যনে? একটু শ্যামল কথা কও, অব্যক্ত বর্ষায় জুড়াক পরাণ! … লোকমুখে শোন নাই? এইখানে রমনীরা নয়ন পিঞ্জরে পুষে শ্যামসুখপাখি! মওলার ইশকুলে পড়ো নাই? আমরা যে শ্যামলবরণ জাতি! … সাদা না, শ্যামল মনের মানস আমি! দেখি, সময়ে সময়ে রং বদলায় প্রকৃতি

অপরাধ বিষয়ক

আমাদের অপরাধটুকুর বর্ণনা মাত্রা লিখে রাখা যায়, বিজ্ঞানপাতায়! … সুন্দর মুহুর্তটুকু ফুটিয়ে তোলার জন্য অপরাধটুকুর প্রয়োজন ছিল! বর্ষার কাজল পরা চোখে, বৃষ্টির মুগ্ধতা ঝরা কিছু অপরাধ জমা থাক, কদম ফুলের কাছে! … এটুকু জানুক, ভোরের মানসি! আরও জানুক, অপরাধ বিপ্লবের ধাত্রী, ফুল ফোঁটার ব্যাকরণ! যারইই

স্বাধীনতা ও অন্যান্য কবিতা

প্রিয় কমরেড বাঙলা ভেঙে আলাদা হল কত আগে! সে কোন্ রাজনীতির জয়? বল যদি— বিপর্য্যয়! প্রিয় কমরেড! তুমি ওপার-বাংলায় আমি এপার-বাংলায়— কেবলমাত্র একটি স্বরবর্ণের দূরত্ব নিয়ে আমরা বেঁচে থাকছি বর্ডারের দুপাশে তথাপি কাছাকাছি— জাতীয়তার বুলেটে ক্রমাগত এতটাই জর্জ্জরিত তবুও সমগ্রকে ধারণ করে হয়ে উঠছি বিশ্বনাগরিক!

আমারে বধিবে যে হৃদয়ে বাড়িতেছে সে, জনশ্রুতি ঢুকে পড়ে মিথের ভেতর ও দোল-রং

আমারে বধিবে যে হৃদয়ে বাড়িতেছে সে এই কাল সাক্ষ্য দিচ্ছে গোপনের, নিশ্চয় আড়াল কর্‌ছে প্রকাশ্যের-ও; লিখে রেখেছে স্বেচ্ছায়, আমারে বধিবে যে হৃদয়ে বাড়িতেছে সে। … এই ক্ষণ হৈতে পার হয়ে গেল কথারা— পার হয়ে গেলে গন্তব্য, শ্রী বেরিয়ে পড়ে ভ্রম বিহারে— ভ্রমর এসে জানান দেয়

অভিসার

সঞ্চরদধরসুধামধুরধ্বনিমুখরিতমোহনবংশম্ — জয়দেব (গীতগোবিন্দ/দ্বিতীয় সর্গ) এবার মলাট খুলে আমাকে পড় হে তুমি এমন উলট-পালট, দুনিয়া কাঁপানো সে এক প্রকট রাগিনী সুরে, আমাকেই উঠ গেয়ে। বাজো লো বাঁশির সুর বাজো তার ঠোঁটে, অধর অমৃত তার সুরে সুরে আলোড়িত আকাশে বাতাসে হায় ছুটে। একি অনটন, অনিশ স্বপন

গোধূলী

চিরদিন জোকার সেজে মনস্থ করে যায় আঙ্গুলের স্পর্শ তবুও নিস্তার নেই। শ্বাস ছেড়ে কুড়িয়ে নেয় আয়ু যতটুকু বেঁচে থাকে এ’সব ভান কেবল। ভানের শরীর পেরিয়ে অমোঘ সংসার নিয়ে সাদা পৃষ্ঠায় ভরে ওঠে কাঁটাছেড়া জীবন। যদিও পালানোর পথ নেই তবুও হাঁটু ভাঁজ করে খানিক নৈঃশব্দে কেঁদে

ঘুম

বুকের ভিতর একটা ঘুঘু হুহু করে কাঁদে। কোমল হাতে নরম পালকের ভিতর সূর্য্য জ্বলে ওঠে। স্পর্শ পেয়ে সে আরো কাঁদে। বুকের ভিতর ঝাপটে ধরি যদি কান্না থামিয়ে ফিক করে হেসে ফেলে আদুরে পাখিটা। দূরে আরো দূরে আল্লাহ আল্লাহ জিকিরে কলরব তুল্‌ছে হুজুর। কান্না মুঠোয় নিয়ে