পাথরের তলে ঘুমিয়ে থাকে যে জল আমি তার বুকে কান পেতে শুনি বয়ে চলা আদিম কথা।
দেখি মরুঝড়ে শীর্ণ আদম গড়িয়ে এসেছে অন্নপূর্ণার দুয়ারে—
ক্লিষ্ট দুখানি হাত জুড়ে গজিয়ে ওঠেছে কাঁটাগাছ,
ক্ষতবিক্ষত হৃদয়ে বাঁধা সূর্পণখার লাল কাঁচুলী থেকে ভেসে আসে খাণ্ডব ঘ্রাণ,
পাথরে কপাল ঠেকিয়ে বলে জল দাও!
দাও ধান্য! দূর্ব্বাঘাস ঘুম!
বলে সহস্র জন্মের জপ…
দুয়ার কবাট ভেঙে তখন ত্রিবেণী সঙ্গমে বাসন্তী রঙ শাড়ী পরে নেচে ওঠে সরস্বতী—
‘ঘিরি ঘিরি ঘিরি নাচে
ঘিরি ঘিরি ঘিরি নাচে’
ফলবতী যমুনার ঢেউয়ে নুয়ে আসে মহাকাল।
হামাগুড়ি দিয়ে আসে কারবালা দিন—
জল দাও জায়েদা…
পাথর সরে গেলে জল উড়ে যায়।
তাকে তাবিজ করে ফের ঘাট বাঁধবে কালিদাস,
সেখানে নৌকা ভিড়িয়ে ফের গন্ধমের বীজ বুনবে নূহ নরম পলির সুসময়ে।
নতুন মাটীর শরীরে হাত রেখে তারও কি মনে পড়ে ফেলে আসা স্বর্গোদ্যান?
মৌসুমী বায়ুর মুখ ভুলে গিয়ে যদি লীলাবান কৃষ্ণ চোখ ফিরিয়ে নেয় আরশের দিকে,
লগ্নভ্রষ্টা মাটীর চৌচির বুক থেকে উড়ে যাবে পূণ্যিপুকুর, নিভৃত সংসার।
জটাধারী একাগ্রতায় যে একবার সাধনা করে নদীর রূপ, একবার পায় তারে, একবার হারায় হারিয়ে বুকের পাথর;
তার কপালে কে ছোঁয়াবে দেওদার ফুলের প্রাণ? কে তাকে বলবে ভালবাস, ভালবাস আবার?
নুসরাত জাহান রচিত ও প্রকৃতিপুরুষ কর্ত্তৃক প্রকাশিত কবিতা, মাটিতে নামো, হে ঈশ্বর