গদ্য কবিতা কুড়িয়ে পাই, কবিতা করোটীতে

০১.
শূন্য গহ্বর দেখলেই করোটীতে কবিতা হাতড়াই। কবিতা কুড়িয়ে পাই। ফুলকে যখন মৃত বলি তখন তা মিথ্যে হলে হতেও পারে কিন্তু কবিতা হয়। বাস্তবে ফুল মৃত হয় না। ফুল মরে না, শুকিয়ে ঝরে যায়। সে বর্ণিল ও সুবাসিত হয়, একদিন শুকিয়ে যায়। শুকিয়ে যাওয়া আর মরে যাওয়া এক কথা নয়। শুকনো ফুলে কবিতা নেই। এ কথা প্রতিদিনের সংলাপে নিত্য আসে যায়। কোন উপলব্ধির মাত্রা সংলগ্ন নয়। ‘মৃত ফুল’ কথাটী কবিতাগন্ধী। কারণ তা প্রতীক, উপমা, সঙ্কেত অথবা রূপকাশ্রয়ী হয়ে বহুমাত্রিক উপলব্ধির জন্ম দেয়। এভাবে বললে আমার মনে হয় কবিতা নিয়ে আমার ভাবনা প্রকাশে কম মিথ্যাচার করা হয়— একান্ত আমার প্রতীতি।

০২.
‘সকলেই কবি নয়, কেউ কেউ কবি’। ‘কবিতার কথা’ প্রবন্ধে জীবনানন্দ দাশের এই উচ্চারণে কবিকুল নিয়ে কোন সরল-সাধারণ স্বীকৃতি নেই, অস্বীকৃতিও নেই। অনুসন্ধান আছে। কবিতা কোথায় তার অন্বিষ্ট অনুসন্ধানের দূরবর্ত্তী ইঙ্গিত আছে। সারবত্তা ও শক্তিমত্তার বিচারে ‘কবিতার কথা’ প্রবন্ধ কবিতা নিয়ে কথা বলার পরিসীমা ও সুযোগকে সীমিত করেছে। আঙ্গিক ও রূপ উন্মোচনের প্রশ্নে প্রবন্ধের উচ্চতা বিস্ময়কর। বাংলা সাহিত্যের জন্য গৗরবেরও। ওই উচ্চতা অতিক্রম না করে কবিতা সম্পর্কে উচ্চারণ অনেকাংশে চর্ব্বিতচর্ব্বণ বা দ্বিরুক্তির দোষে দুষ্ট হয়।

সৃজনশীল কর্ম্ম একই ধারায় চলে না। পথ বদলায়। তাহলে সমান্তরাল পথ নির্ম্মাণের চেষ্টা করা যায়। সেখানেও ভাবনার অনুষঙ্গ থেকে জীবনানন্দ দাশ-এর বোধকে উপড়ে ফেলে দেয়ার সুযোগ খুব কমই থাকে। আধুনিক কবিতায় জীবনানন্দ দাশ এখনও কতটা প্রাসঙ্গিক ও প্রতাপ নিয়ে আছেন তা সহজেই অনুমেয়। বিশ্বায়ন, আর্থ-সামাজিক বদলের প্রসঙ্গটী শুরুতেই বলা হয়েছে। অস্থিরতা থেকে অনিকেত-বোধ জন্মায়। অস্থিরতার কাল নতুন করে ফিরে এসেছে। জীবনানন্দ দাশ তাই আজও প্রাসঙ্গিক। অস্থির সময়ে মগজের নিউরোন সেলের ভিন্নতর আচরণ ব্যক্তির মনকে আলোড়িত, আন্দোলিত করবেই। কবি মাত্রই সংবেদনশীল। কবি মাত্রই প্রবক্তা। কবি মাত্রই বোধকে বিচূর্ণ করে বোধের নতুন বিনির্ম্মাণের পুরধা। ইতিহাসের পেছনে গেলে তার একটা অবয়ব ধরা যায়।

জীবনানন্দ দাশ এর জন্ম ১৮৯৯ সালে। অল্প ব্যাপ্তিকালের জীবনে তার সামনে ছিল দু’টা বিশ্বযুদ্ধ, দুর্ভিক্ষ, দেশবিভাগ, দাঙ্গা, পরিযায়ী মানুষ, উপমহাদেশে উপনিবেশের রূপান্তর। পরিযায়ী মানুষের মনও পরিযায়ী পাখীর মত। স্থিতিশীলতার আকাঙ্খা ছিল আকাশ-কুসুম। অন্তরাত্মার বিক্ষোভে আত্ম-পরিচয়ের সঙ্কট ছিল। সভ্যতার গজ-ফিতে মেপে সমাজ-মানুষ-রাষ্ট্র আবার এই সঙ্কটে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অমিয় সাফল্য হাতে নিয়ে মানুষ আবারও পরিচয়হীন। জীবনানন্দ দাশ আধুনিক কবিতায় আবার সাড়া দিয়ে যায়। নাড়া দিয়ে যায়। ফিরে আসে ইম্প্রেশেনিজম। ফিরে আসে পরাবাস্তবতা বা স্যুররিয়ালিজম। বোধের খোঁড়াখুঁড়ি। শব্দের অনুসন্ধান রূপকের আবরণ।

০৩.
আজ দৌড়বিদের মত প্রুযুক্তির বিকাশ, বাজার অর্থনীতির নাগপাশ ও বিশ্বায়নের কালে অন্য সঙ্কটের মুখোমুখী সমাজ, সমাজ-আশ্রিত মানুষ ও তার সংস্কৃতি। আজ শুধু পরিচয় নয়, পরিত্রাণও কবিতার অন্বিষ্ট। কবিতার যাত্রা অনিঃশেষ। কবিতা কি তিমির বিনাশী! কবিতা কি সৌন্দর্য্যের সন্ধান না কি এক পেয়ালা বিমূর্ত্ত ব্যথা যা আনন্দের অপর পিঠ? কবিতা আমার কাছে বোধিকল্প যার যাত্রাপথ নাভী থেকে নভোচারীর কল্পলোক পর্য্যন্ত। অথবা তার চেয়েও বেশী কিছু যাকে সীমায় ধরা যায় না। ধরার আর্ত্তি ও প্রয়াস থেকে যায় নিরন্তর। কবিতা সীমিত নয়। সীমানা অথবা সীমান্ত অতিক্রম করাই কবিতার ধর্ম্ম। তার জন্য শব্দের খোঁজ, তার জন্য শব্দের সেতুবন্ধ রচনা। স্থাপত্যরীতির মত শব্দকে স্তরে স্তরে বিন্যাস করা যা চিন্তাসূত্র, সংবেদ অথবা কল্পনাকে একটা ঐক্যে প্রতিষ্ঠিত করে। এই ঐক্য ঐকতানের মত পাঠকের কাছে মনে হতে পারে।

কবিতা বুঝে ওঠা জরুরী কি না, আমার জানা নেই। কবিতা সংযোগ স্থাপন করে বলেই আমার বিশ্বাস। যোগাযোগ কবিতার মৌল চরিত্রলক্ষণ। মননশীল পাঠকের সাথে যোগযোগ কবিতার ধর্ম্ম। এও এক অন্য তারবার্ত্তা। যার মাধ্যম হয়ত তার নয়, সংবেদ। এই সংবেদ পাঠকের মননে সঙ্কেত দেয়। সঙ্কেত অনূদিত হয়। কবিতা তাই সাঙ্কেতিক। সঙ্কেত ছাড়া কবিতাকে চিহ্নিত করা দুরূহ। এ প্রসঙ্গে টি. এস. এলিয়টের কথা মনে পড়ে। একটা সফল কবিতা বোঝার আগেই হৃদয়ে সঞ্চারিত অথবা সঞ্চালিত হয়ে যায়। ‘Genuine poetry can communicate before it is understood.’ (T. S. Eliot) এলিয়ট যোগসূত্র স্থাপনের কথাই বলেছেন।

কবিতা ও বাংলা সাহিত্যে রবীন্দ্রনাথের সর্ব্বগ্রাসী প্রভাবের পর বাংলা কবিতাকে পাঠকের হৃদয়ে যে শাসন করেছেন, আজও করছেন তিনি জীবনানন্দ দাশ। এ কথা বললে অত্যুক্তির দায়ে হয়ত পড়তে হবে না। জীবনানন্দ পাঠের ক্ষেত্রে টি. এস. এলিয়টের উচ্চারণ প্রবল ও প্রত্যক্ষ সত্য।

‘বনলতা সেন’ আজ একটা মিথ। পাঠকের কল্পনায় তা এত বিস্তারিত ও বিবর্দ্ধিত হয়ে গেছে যা মিথ এর মত। এ কথা কবিতার সমালোচক মাত্রই স্বীকার করেন। কবিতাকে ব্যাখ্যার প্রচেষ্টা অপ্রতুল নয়। সব কালেই প্রচুর হয়েছে। অতীতে হয়েছে। এখনও হচ্ছে। কবিতাকে সমলোচক ব্যবচ্ছেদ করেন, কবিতার নির্ম্মাণশৈলী, আঙ্গিক, অনুষঙ্গ ও প্রকরণ দিয়ে। পাঠক কবিতাকে অন্যভাবে নেয়, তার মনে যেভাবে রেখাপাত করে। এভাবে ব্যক্তি বিশেষে কবিতার পাঠ ও প্রতিক্রিয়া ভিন্নতর হয়। পাঠকের মন স্বতন্ত্র বলেই তার কাছে কবিতার রূপ ও আদলের ব্যাখ্যও স্বতন্ত্র।

তারপরও ‘বনলতা সেন’ অব্যাখ্যেয়। ধরা যায়, আবার যায় না, ব্যাখ্যা পরিধির বাইরে থেকে যায়। কিন্তু যোগাযোগের প্রশ্নে বা সংবেদকে স্পর্শ করার ক্ষেত্রে তা অব্যাক্ষেয় নয়, সে ধরা দেয়। ঠিক কোথায় কোন বিন্দুতে ধরা দেয় তাকে সুনির্দ্দিষ্ট ও সুচিহ্নিত করা সম্ভব নয়। এই ধরা-অধরা বা আলো-ছায়ার বিষয়কে কবিতার একটা মৌল বৈশিষ্ট্য বলে ধরে নেয়া যায়।

আব্রু উন্মোচিত হলে দেখার কিছুই থাকে না, কবিতার ক্ষেত্রে এ কথাই সত্য। অথচ প্রচলিত ও প্রতিষ্ঠিত ধারণাটী এর সম্পূর্ণ উল্টা। উন্মোচিত হলেই দেখা হয়ে যায়। কবিতা বস্তুজগতের এই সনাতন ভাবনার বিপরীত গোলার্দ্ধে। কবিতার ভূগোল ভিন্ন। তার জমিনও ভিন্ন। যদি তাই হয়, তাহলে কবিতা জরিপের নিয়মও ভিন্ন হবে, সেটাই স্বাভাবিক। যারা কবিতার সংজ্ঞা দিয়েছেন তারা বিশ্ব সাহিত্যের প্রাজ্ঞ ব্যক্তিত্ব।

ইংরেজী সাহিত্যে উইলিয়াম ওয়ার্ডসওয়ার্থ ও টি. এস. এলিয়টের সংজ্ঞা খুব গুরুত্বের সাথে নেওয়া হয়। বাংলা কবিতায় ইংরেজী সাহিত্যের প্রভাব প্রত্যক্ষ। ত্রিশোত্তর আধুনিক কবিদের সকলের ক্ষেত্রে তা সত্য। টি. এস. এলিয়ট বা ওয়ার্ডসওয়ার্থ এর সংজ্ঞা তাই প্রাসঙ্গিক। কবিতার ইতিহাসে, কাব্য-সমালোচকদের চোখে তা গুরুত্বপূর্ণ ও প্রতিষ্ঠিত।

০৪.
১৭৮৯ সালে ফরাসী বিপ্লব ইউরোপে উদারতার সুবাতাস ছড়ায়। ফরাসী বিপ্লবের বীজমন্ত্র ছিল লিবার্টী, ইকুয়ালিটী, ফ্র্যাটরনিটী। (Liberty, Equality and Fraternity) মুক্তি, সাম্য, ভ্রাতৃত্ব। এই উদারনৈতিক প্রতিবেশ ইংরেজী সাহিত্যে রোমান্টিক যুগের সূচনা করে। এর পূরধা ছিলেন উলিয়াম ওয়ার্সওয়ার্থ (Willam Wordsworth) ও স্যামুয়েল টেইলর কোলরিজ (Samuel Tailor Coleridge)। দু’জনে যৌথভাবে প্রকাশ করেন লিরিক্যাল ব্যালাডস (Lyrical Ballads, 1798) ‘লিরিক্যাল ব্যলাডস’ প্রকাশিত হয় ফরাসী বিপ্লবের প্রায় দশ বছর পর ১৭৯৮ সালে।

মুক্তি সাম্য ও ভ্রাতৃত্ববোধের অনিবার্য্য ফলাফল রোমান্টিসিজম। ‘রোমন্টিসিজম’ কথাটি মনে এলেই ভালোবাসা বা প্রেম-প্রসূত উপাদানের কথা আগে মনে আসে। কিন্তু রোমান্টিসিজমের শেকড়ে রয়েছে মুক্তমনের ভাবনা যা মুক্তি বা স্বাধীনতা থেকে উৎসারিত। এই প্রেম নিসর্গ হতে পারে। নিসর্গ, রহস্য, মন্ময়তা, স্বতস্ফূর্ত্ততা, ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্য ও রূপবৈচিত্রের উপাদানে পরিপূর্ণ হতে পারে। রোমান্টিসিজম আসলে বহুমাত্রিক। তা একই সাথে প্রাকৃতিক এবং অতিপ্রাকৃতিক বিষয়কে প্রশ্রয় দেয়। এর প্রতিফলন দেখা যায় ওয়ার্ডসওয়ার্থ ও কোলরিজের কবিতা-ভাবনায়। ‘লিরিক্যাল ব্যালাডস’-এ দু’জন কবিতার রূপ ও কবিতাকে সংজ্ঞায়িত করতে সচেষ্ট হন। ‘Poetry is the spontaneous overflow of powerful feelings: it takes its origin from emotion recollected in tranquility.’ (William Wordsworth, Lyrical Ballads, 1798) কবিতা সুঠাম অনভুতির স্বতস্ফূর্ত্ত প্রকাশ। কবিতার শেকড় আবেগে প্রোথিত এবং সমাহিত অবস্থায় পুনরুজ্জীবিত।

‘লিরিক্যাল ব্যালাডস’-এ উইলিয়াম ওয়ার্সওয়ার্থ প্রকৃতি সংলগ্ন থাকেন। কোলরিজ অতিপ্রাকৃত উপাদানকে কবিতার বিষয়বস্তু হিসেবে গ্রহণ করেন। ‘দ্য রাইম অফ দ্য অ্যানসিয়েন্ট ম্যারিনার’ (The Rhyme of the Ancient Mariner), কুবলাই খান (Kublai Khan) বা ক্রিস্টাবেল (Christabel) এর মত অতিপ্রাকৃত বিষয় নির্ভর কবিতা কোলরিজের কলমে এ পর্য্যায়ে রচিত হয়। ওয়ার্ডসওয়ার্থ এর কলম থেকে আসে ‘লাইনস রিটেন অ্যাবাভ টিনটার্ন অ্যাবি’-র মত কবিতা (Lines Written Above Tintern Abbey)। মুক্তকণ্ঠ বা মুক্তস্বর যার মূলমন্ত্র। আর এই মুক্তস্বর এসেছিল স্বাধীনতা-সাম্য ও ভ্রাতৃত্ববোধ থেকে। কবিতা এভাবে সময় ও সমাজ-সন্নিহিত থাকে। আর্থ-সামাজিক কাঠমো বদলায়। সংস্কৃতিও বদলায়। তখন ব্যাক্তিমনও বদলায়। কবিতাও বদলে যায়।

এর এক শতকের বেশী সময় পর টি. এস. এলিয়ট কবিতার সংজ্ঞা আমূল পাল্টে দেন। কারণ ওয়েস্ট ল্যান্ড খ্যাত কবি ক্রুয়েল এপ্রিল বা নিষ্ঠুর গ্রীষ্মকে দেখেছেন, এপ্রিল ইজ দ্য ক্রুয়েলেস্ট মান্থ। (April is the curliest month’ Waste Land by T S Eliot) নোবেল বিজয়ী কবির উচ্চারণ, ‘Poetry is not a turning loose of emotion, but an escape from emotion; it is not the expression of personality, but an escape from personality. (Tradition and the Individual Talent, 1919) এলিয়ট তার ঋদ্ধ, বহুল পঠিত সাহিত্য সমালোচনা ‘ট্র্যডিশন এন্ড দ্য ইনডিভিডুয়াল ট্যালেন্ট’-এ বলেন ভিন্ন কথা। কবিতা নতুন করে সংজ্ঞায়িত হয়। কবিতা ঢিলেঢালা বা অসংগঠিত আবেগ নয়, কবিতা আবেগ থেকে পলায়ন বা মুক্তি। কবিতা ব্যক্তিমন নির্ভর নয়, কবিতা ব্যক্তিমন নিরপেক্ষ।

০৫.
তবু কবিতা নিজেই কবিতার কারিগরদের থেকেও মহান। কবিতা কবিকে অনুসরণ করে না। কবি কবিতাকে অনুসরণ ও অনসন্ধান করেন। একজন কবি তার যাপিত জীবনে পরম্পরা ও সময়ের উপাদানের সংশ্লেষে কবিতাকে বদলে দেন। রূপান্তর করেন। আগামীকাল নতুন পূরোধার হাতে হয়ত কবিতা নতুন করে সংজ্ঞায়িত হবে। তারও রুপান্তর হবে। ইতিহাস তাই বলে। যতোদিন জীবন, যতোদিন এই জীবন ও বস্তুজগতকে প্রত্যক্ষ করার মত মানসলোক থাকবে ততোদিন কবিতা রচিত হবে। প্রবহমান নদীর মতই তা বাঁক-বদল করবে। কোন্ ঘাটে সে কোন্ রত্ন দেখাবে, আমরা তা এখনও জানি না। আমরা পরম্পরা ও ইতিহাস-ঐতিহ্য থেকে আহরণ করতে পারি। আমারা বর্ত্তমানের সাথে তাকে যুক্ত, বিযুক্ত, বা রূপান্তর করতে পারি কিন্তু ভাবিকালের অবয়বকে সুনির্দ্দিষ্ট করতে পারি না।

০৬.
‘ও সে কোন বাঁকে কী ধন দেখাবে
কোন ঘাটে কী দায় ঠেকাবে
কোথায় গিয়ে শেষ মেলে যে … … …’

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গীতিকবিতার অংশ। যেখানে বেজে উঠেছে সংশয়। রূপ ও সৌন্দর্য্যের মধ্যে সংশয়। এই সংশয় কবিতার অন্যতম অস্থিকাঠামো। কবির মন দোলাচলে বিদ্ধ। সুনির্দ্দিষ্ট করে তিনি কিছুই বলেন না। রূপদক্ষের কাছে সংশয় অনিবার্য্য আর এই সংশয় থেকে মুক্তির আকাঙ্খাও অনিবার্য্য। তাই কবিতা রচিত হয়। তাই কবিতা করোটীতে কুড়িয়ে পাই।

জানি না এর শেষ কোথায়, অথবা বলা যায় কবিতার যাত্রাপথ অনিঃশেষ। সংশয়ের সংক্রমণ ও মুক্তির আকাঙ্খার যেমন শেষ নেই, ঠিক তেমন।

রচিত ও প্রকৃতিপুরুষ কর্ত্তৃক প্রকাশিত গদ্য, কবিতা কুড়িয়ে পাই, কবিতা করোটীতে — তে সম্পাদিত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *