সেই কবে মারা গেছে, হাঁটুজল নদী, বাঁকে বাঁকে ঢেউয়ের দোলা,
কাশফুলের ওড়না ওড়া বনে বাতাসের দোলা, সবুজের নৃত্য,
দোলায়িত মন,
মাঠের রাখাল, গরুর পালের হাঁটুজল পাড়ি,
দড়ী ছেঁড়া গাভীটার পিছু ছোটা, রাখালিয়া বাঁশীটার মেঠোমনা সুরে
নেচে নেচে খেলা করা ঘাসফুলটার মন, উদাস কুটীরে ফেরা
সময়যাপন, ভরা কলসের আকাঙ্খা,
সময়ের পটভূমিকায়, মনে, খেলছে এখন জনপদ, নাগরিক কোলাহল,
দালানে দালানে ঢাকা, পুঁজির বাসরে নৃত্য করে, গণেশের জলসায়,
গলায় খেলছে সুর, ধনের গীতালী,
একচিলতে সবুজ উদ্যানে, হাঁটুজল লেকের কিনারে বসে,
ভাবছি এসব, জানে না সোহরাওয়ার্দী, সেই কবে ৭৫-এ মারা গেছে
ঘাসফুলটার মন, বাংলাদেশ,
বাঁকে বাঁকে ঢেউপ্রিয়তায় জেগে ওঠা রেসকোর্স ময়দান,
সুরেলা ভাষণ (…)
যারই গুঞ্জনে বয়ে যেত হাঁটুজল নদী, সমবেত সুরে,
পাখীর কাকলিমুখরিত গাছের ছায়ায়, মেঠোসুরে বেজে ওঠা বন্ধুয়ার গান,
বঙ্গের বাতাস,
পালতোলা নৌকা, বৈঠার ঘায়ে ঘায়ে জেগে ওঠা হাঁটুজল নদী,
বাংলাদেশ, সেই কবে মারা গেছে, ৭৫-এ
আজও বাঁশীর সুরে বেজে ওঠে বিজয়ার কান্না
জানে আলাওল, ভনে চণ্ডিদাস—
সখা, বৃথা যায় প্রেম রজকিনী বাঙলায়, ভুসুকু পায় না, শবরী বালিকার মন
আরণ্যক টিটো রচিত ও প্রকৃতিপুরুষ কর্ত্তৃক প্রকাশিত কবিতা, রোদনের পদাবলী — প্রকৃতিপুরুষ বানান রীতিতে সম্পাদিত।