যাকে ঠিক হৃদয় নয়। ভেবে বসেছিলাম আত্মা।
সেই আত্মা কখন হৃদয়ের খাঁচা ছেড়ে উড়ে গেল।
এখন আমি শুন্য খাঁচার দিকে তাকায়ে থাকি।
সেখানে আর কোন স্পন্দন পাই না।
এখন আমার দৃষ্টি শ্মশানের দিকে তাকিয়ে থাকে।
আমি শুধু বিভ্রমের মত কিছু বিস্ফোরণ দেখি।
কেউ কেউ আমার দিকে অজস্র অভিযোগের বিষ
মাখানো শর-বল্লম-বর্শা ছুঁড়ে দেয়। আমি রক্তাত হই।
খিদে পেলে শ্মশানরক্ষী একথালা ভাত এনে
সানকীতে তুলে দেয় নিতান্ত অনিচ্ছায়।
দলা দলা ভাতগুলি। ধীরে ধীরে গলা জড়িয়ে নামে।
আমার ভীষন তেষ্টা পায়। ভীষণ তেষ্টা পায়।
শ্মশানরক্ষী আড় চোখে আমাকে দেখে।
ক্ষত বিক্ষত শরীর থেকে রক্ত ঝরতে থাকে। ঝরতে থাকে।
ফোটা ফোটা রক্ত কণিকা ক্ষতবিক্ষত শরীরে জমাট বাঁধে।
আমার তাকে দেখা শেষ হয় না।
নিতান্তই আমি শরবিদ্ধ হতে চেয়েছি।
জল তেষ্টায় ছাতি ফাটা কষ্ট চেয়েছি।
শরীরে অজস্র ক্ষত চেয়েছি।
এই যে খাঁচাটুকু।
এই যে শরীর।
এই যে শ্মশানরক্ষী।
এই যে সানকীতে একদলা বরাদ্দ ভাত।
এই যে ক্ষতবিক্ষত শরীর।
এই যে শ্মশানের দোরগোড়ায় এতটুকু আশ্রয়।
আমিও ওইটুকুই চেয়েছি।
কেন যে হৃদয় এবং আত্মার খেলায়
একদিন খানিকটা বেসামাল হয়েছিলাম।
ভাবলেই ধন্ধ জাগে।
অনন্তকাল ক্ষতবিক্ষত বেঁচে থাকার।
সুখে কাতর একটা গহ্বর হয়ত আছে।
যাকে আমি খুঁজছি।
আরশাদ সিদ্দিকী রচিত ও প্রকৃতিপুরুষ কর্ত্তৃক প্রকাশিত কবিতা, জীবাত্মা — প্রকৃতিপুরুষ বানান রীতিতে সম্পাদিত।