এই মহাবিশ্ব
একটা কবিতা, একটা তত্ত্ব, সৌন্দর্য্যের আধার,
কবিতায়
তত্ত্ব থাকে, থাকিতে পারে, না-ও পারে!
কথা হৈল, কবিতা কতদূর? তত্ত্বকে নিয়ে, তত্ত্বকে ছাপিয়ে টোটাল কবিতা হৈল কতটুকু?
কেবল, তত্ত্ব-ও কবিতা হৈতে পারে, যেমন পরমাপ্রকৃতি …
কবিতাবিহীন তত্ত্ব কবিতা না; তত্ত্ব হৈল—
কবি যক্ষণ লেখে অবচেতনে সেখানে ধরা দেয় চেতন মনের নানান ভাবনা, নানান প্রকাশ, জীবনযাপন
সবকিছু মিলেমিশে একাকারে
তত্ত্বের চেতনা তৈয়ার হয়, তত্ত্ববোধ কবিতায় ধরা দেয় অধরা আনন্দে
তত্ত্ব ছাড়াও কবিতা হৈতে পারে, সে অন্যকথার তত্ত্ব!
ছন্দ/অলঙ্কার ছাড়া কবিতা হয় না, কেবল কবিতা না, সবকিছুই ছন্দময় ব্যাপার—
যক্ষণ বৃষ্টি পড়ে, সেখানেও ছন্দ কাজ করে,
বৃষ্টি পড়ে পাতা নড়ে, সেখানেও ছন্দ …
পাতা নড়ে মন নড়ে, সেখানেও ছন্দ … মন নড়ে দেহ নড়ে,
সেখানেও ছন্দ …
ধরুন লোকটা হাঁটিতেছে, পায়ে পায়ে
পা ফেলার মাঝে আছে, মাপ। ব্যাকরণ। পা ফেলার মাত্রা।
লোকটা ভাবছে, তিনি মাত্রা ভাঙ্গবেন হাঁটিবেন না, দৌঁড়াবেন …
দৌঁড়আআআতে লাগিল—
দেখা যায়,
সেখানেও মাত্রা, অন্যরকম; দৌঁড়ানোর মাত্রা—
মাত্রা বিষয়টাই ছন্দ
একটু কাণ পাতলেই ধরা দেয়,
উদাস দুপুরে পাখীটার একটানা ডাক, ফের, থেমে থেমে ডাকের মাঝেও ছন্দ আছে, আছে সুর, সুরা ও সাকী—
ছন্দে ছন্দে চলিতে চলিতে পতনেও ছন্দ আছে
আছে
পতনের আনন্দ!
যে ধরে সে ধরে, যে ধরে না সে ধরে না—
ধরি কিংবা না ধরি, মানি কি না মানি, আমাকে জানিতে হৈবে …
যে জানে, তার না জানলেও চলে, যেহুতু সে জানে, সে ধরে—
এই যে দেখুন,
আমি আপনাকে হাত বাড়ালেই ধরতে পারি, তবু ধরিতেছি না,
মনোরম পাপে!
মোটকথা,
কাঠামো ভাঙ্গিতে হৈলে, কাঠামোকে জানিতে হৈবে, যে জানে না, সে ভেঙ্গে গড়িতে পারে না,
কাঠামো ভেঙ্গে কাঠামো না গড়িলে জীবন চলিবে কী করে?
যেহুতু
জীবন একটা কাঠামো—
ফুল— পাপড়ির মর্ম্ম থেকে ঝরে পড়া টুপ্ টাপ্ শিশিরের গান
কিংবা
মেশিনগানের একটানা ছন্দে নির্গত ধ্বংস কিংবা
শ্যামসম সাধের মরণ
কিংবা সৃষ্টি!
মহাবিশ্ব > তত্ত্বের শৃঙ্খলা + ছন্দ + অবাক অলঙ্কার > অবাক কবিতা > সৃজন গুঞ্জনে ধ্বনিত প্রথম বাক্, বাক্য—
যাহার হৃদয়ে
আমরা বন্ধু হৈতে পারি,
একটা মাত্রাকে ভেঙ্গে আরেকটা মাত্রার দিকে যেতে পারি—
দেখুন, ভেঙ্গে পড়া আয়ণার টুকরা টুকরা মূহুর্ত্তরা
একটা মাত্রার দিকে
যাচ্ছে, যার মাত্রা, বহুমুখী! …
আরণ্যক টিটো রচিত ও প্রকৃতিপুরুষ কর্ত্তৃক প্রকাশিত কবিতা, প্রিয়, ভোরের শিউলি ঝরা পথে যেতে যেতে আপনাকে যাহা বলেছিলাম — প্রকৃতিপুরুষ বানান রীতিতে সম্পাদিত।