কবিতা দশ টাকা ও দৃষ্টিপাত

অলঙ্করণ : হিম ঋতব্রত

দশ টাকা

মালিবাগে মালী নাই, ভাবলাম ঘরে ফিরে যাই—
চালককে বললাম
— বৌদ্ধ মন্দিরে যাবেন?
— যাব
— ভাড়া কত?
— দিয়েন চল্লিশ
— কম চাইলেন! চিনেন তো?
— চিনি, সবার কাছে কি সমান চাওয়া যায়!

ওইখানে মহামতি বুদ্ধের নিবাস
চাতকের ভিড় খুঁজে ফিরে দর্শনের দুর্লভ নির্য্যাস
এখানে রিকশা টানছেন
অল্প চাওয়ার যুক্তিতে নির্ভার সক্রেটিস!

যথা গন্তব্যেই নামি, দশ টাকা বেশী দিই
বেশী না, ওটাই ন‍্যায‍্য ভাড়া
দার্শনিক চালকের মুখে মৃদু সুখ
দশটী টাকার কী আজব কেরামতি!

দশ টাকাতেই লুকিয়ে ছিলাম আমি, আমার কবিতা
বঙ্গবন্ধুর ছবির ঠিক পিছনেই
বোধিবৃক্ষের ছায়ায়, বুদ্ধের দর্শনে!

 

 

অলঙ্করণ : হিম ঋতব্রত

দৃষ্টিপাত

তোমাকে দেখতে পাচ্ছি
প্রাচীন প্রান্তরে, পূজা-পার্ব্বণে, পুরাণে—

ইতিহাসের উঠানে
ঘোমটা মাথায় ঠাঁই দাঁড়ানো চৌকাঠে
অপেক্ষার যন্ত্রণার রিক্ত চাহনীতে
আনত ভঙ্গীতে রেহেলে, জায়নমাযে—

তোমাকে দেখতে পাচ্ছি
পিছমোড়া বাঁধা যুবকের দাঁত-কামড়ানো ঠোঁটে
ধুলিমাখা বুড়িমার আরশ কাঁপানো ককানো কান্নায়
প্রদোষে প্রত‍্যুষে তন্দ্রা ভাঙা বুক ধড়ফড়
রুদ্ধ স্বকালের অনিবার্য্য সংঘাতে—

ওমলেট চিবোতে চিবোতে
লিখছি তোমাকে আজ, ডিজিটাল পেনে
লিখে যাব, যতদিন না ফুরায়
মায়ের মুখের ভাষা, হৃৎমরমের সুপ্ত কালি।

রচিত ও প্রকৃতিপুরুষ কর্ত্তৃক প্রকাশিত কবিতা, দশ টাকা ও দৃষ্টিপাত — তে সম্পাদিত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *